বায়ুসেনা শক্তিতে প্রথম পাঁচে ভারত, জোর টক্কর চিনের সঙ্গে

ভারতীয় বিমানবাহিনী এখন বিশ্বের সেরা পাঁচে। একাধিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই সম্মানজনক অবস্থানের খবর। একটি সমীক্ষায় দক্ষতার ভিত্তিতে ভারতকে চিনা বিমানবাহিনীর চেয়েও এগিয়ে রাখা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:৩০
Share:

ভারতীয় বিমানবাহিনী এখন বিশ্বের সেরা পাঁচে। একাধিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই সম্মানজনক অবস্থানের খবর। একটি সমীক্ষায় দক্ষতার ভিত্তিতে ভারতকে চিনা বিমানবাহিনীর চেয়েও এগিয়ে রাখা হয়েছে। একাধিক যুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতীয় বিমানবাহিনী ১৯৯৯ সালে কার্গিলের দুর্গম পাহাড়ে যে ভাবে নাস্তানাবুদ করেছিল পাকিস্তানি সেনাকে, সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে সেই তথ্যও।

Advertisement

সমীক্ষা রিপোর্টে বিশ্বের সেরা ১০টি বিমানবাহিনীর নাম তুলে ধরা হয়েছে। একাধিক বহুজাতিক বেসরকারি সংস্থার তরফে করা আলাদা আলাদা সমীক্ষার রিপোর্টে প্রথম দশে থাকা দেশগুলির নাম কিন্তু মিলে যাচ্ছে। দশের মধ্যে কে আগে, একটু পিছনে— তা নিয়ে সমীক্ষক সংস্থাগুলির মধ্যে সামান্য মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু, প্রতিটি সমীক্ষাই বলছে আকারে এবং সংখ্যার বিচারে ভারতীয় বিমানবাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম। এর সঙ্গে পেশাদারিত্ব, যুদ্ধবিমানের মান এবং যুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা যোগ করে একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, ভারতীয় বিমানবাহিনী চিনের চেয়েও শক্তিশালী।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বিমানবাহিনী হিসেবে অবশ্যই উঠে এসেছে আমেরিকার বিমানবাহিনীর নাম। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম এবং অপরিসীম দক্ষতায় তারা অন্য সব বিমানবাহিনীর চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। যুদ্ধবিমানের সংখ্যাতেও আমেরিকার ধারেকাছে নেই অন্য কোনও দেশ। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, আমেরিকার হাতে যতগুলি যুদ্ধবিমান রয়েছে, গোটা বিশ্বের অন্য সব দেশের বিমানবাহিনীকে জুড়লে সেই সংখ্যার সমান হওয়া যাবে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। তৃতীয় স্থানে ইজরায়েল। বিমানবাহিনীর আকারে ইজরায়েল খুব বড় নয়। কিন্তু প্রায় সবক’টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা ইজরায়েলি বিমানবাহিনীর দক্ষমতা অসামান্য, বলছে সমীক্ষা রিপোর্ট। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারেও ইজরায়েল এয়ার ফোর্স অনেকের চেয়ে এগিয়ে। চতুর্থ স্থানে রাখা হয়েছে ভারতকে। ১ লক্ষ ৭০ হাজার কর্মী এবং ১৫০০ যুদ্ধবিমান নিয়ে গড়ে ওঠা এই বিশাল বাহিনীর ব্যবহৃত সমর সরঞ্জামের মানও অন্যান্য দেশের পক্ষে ঈর্ষণীয়। দাবি সমীক্ষকদের। এই সমীক্ষাতে ভারতের পরেই ঠাঁই দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্সকে। যুদ্ধবিমান এবং যোদ্ধার সংখ্যায় ভারতের চেয়ে অনেক পিছনে রয়্যাল এয়ার ফোর্স। কিন্তু, আধুনিকতা, দক্ষতা এবং বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিয়ে সফলভাবে লক্ষ্য পূরণের কথা মাথায় রেখে ব্রিটিশ বিমানবাহিনীকে প্রথম পাঁচেই রাখা হয়েছে। স্ট্র্যাটেজিক বম্বিং বা কৌশলগত বোমা হামলা চালানোর দক্ষতায় ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্সের জুড়ি নেই গোটা পৃথিবীতে। বলছেন সমীক্ষকরা। ষষ্ঠ স্থানে রাখা হয়েছে চিনের বিমানবাহিনীকে। পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের হাতে রয়েছে ২৫০০ যুদ্ধবিমান। রয়েছেন ৩ লক্ষ ৩০ হাজার কর্মী। আকারে ভারতের চেয়ে বেশ খানিকটা বড় হলেও বড়সড় যুদ্ধে অংশ নিয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়ার রেকর্ড চিনা বিমানবাহিনীর নেই। সে কথা মাথায় রেখেই চিনকে কিছুটা পিছনে রাখা। তবে তুল্যমূল্য বিচারে এই বিমানবাহিনীগুলির কোনওটিই কারও চেয়ে খুব এগিয়ে বা খুব পিছিয়ে নয়। শক্তির বিচারে তারা পরস্পরের খুব কাছাকাছি। দাবি সমীক্ষকদের।

Advertisement

আরও পড়ুন:

ভিয়েতনামে ভারতীয় নৌঘাঁটি, টেনশনে চিন

ভারতীয় বায়ুসেনার দুর্ধর্ষ যোদ্ধারা

সপ্তম স্থানে ফরাসি বিমানবাহিনী, অষ্টম স্থানে জার্মানি, নবম স্থানে রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোর্স এবং দশম স্থানে জাপান সেল্ফ এয়ার ডিফেন্স ফোর্স রয়েছে বলে সমীক্ষক সংস্থাগুলি মনে করছে।

একটি সমীক্ষায় অবশ্য চিনকে ভারতের চেয়ে সামান্য এগিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে বিমানবাহিনীর আকার, পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, ক্ষমতা, যুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা— এই সব বিচার করে প্রথম তিনটি স্থানে আমেরিকা, রাশিয়া এবং ইজরায়েল। তার পর রয়েছে চিন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ভারত, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। এই দেশগুলির সবক’টিই প্রয়োজনে নিজেদের দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষমতা রাখে বলে সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাকিস্তান কোনও সমীক্ষাতেই প্রথম দশের ধারেকাছে পৌঁছয়নি। ৯০০টি যুদ্ধবিমান থাকলেও, সেগুলির মান, পাক বিমানবাহিনীর পেশাদারিত্বের ধরন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের অভাবই এর জন্য দায়ী। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

তৃতীয় একটি সমীক্ষায় প্রথম ১০ থেকে ইজরায়েল ও অস্ট্রেলিয়াকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি আটটি দেশের নাম একই। সেখানেও চিন-ভারত প্রথম পাঁচে এবং পাশাপাশি অবস্থানে। নবম ও দশম স্থানে রাখা হয়েছে তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়াকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন