ভূমিকম্পের পরে আফগানিস্তানের ছবি। ছবি: রয়টার্স।
আফগানিস্তানে রবিবার গভীর রাতে একের পর এক ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়ে গেল। আহত প্রায় হাজার তিনেক মানুষ। তবে তালিবান শাসিত যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের প্রতি সাহায্যের হাত বা়ড়িয়ে দিল ভারত।
আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত ১৪১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রবিবারই নিজের এক্স হ্যান্ডলে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও জানিয়েছেন, আফগানিস্তানকে সর্বতোভাবে মানবিক সাহায্য করতে ভারত প্রস্তুত। সোমবার রাতে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, চালের বস্তা, তাঁবু এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বোঝাই ট্রাক কাবুলের উদ্দেশে রওনা হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী মৌলবী আমীর খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘ভূমিকম্পে এতগুলি প্রাণহানির জন্য ওঁকে সমবেদনা জানিয়েছি। ওঁকে জানিয়েছি যে, ভারত আজ কাবুলে ১০০০টি পরিবারের জন্য তাঁবু পাঠিয়েছে। এ ছাড়াও, ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী কুনারে পাঠানো হচ্ছে। কাল থেকে ভারত থেকে আরও ত্রাণ পাঠানো শুরু করবে। এই কঠিন সময়ে ভারত আফগানিস্তানের পাশে রয়েছে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দফতর (ইউএনওসিএইচএ)-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার রাতের ভূমিকম্পটি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে নানগরহর প্রদেশে ঘটেছিল। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মূলত কামা জেলা। নানগরহরের পাশাপাশি কুনার, লাঘমান এবং নুরিস্তান প্রদেশও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ১২,০০০ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৪১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। প্রশাসনের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বহু মানুষ। সে জন্য তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে।
রবিবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাত পৌনে ১টা) প্রথম কেঁপে ওঠে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বে কুনার প্রদেশ। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৩। কম্পনের উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে আট কিলোমিটার গভীরে। এর পরেও বেশ কয়েক বার ভূকম্প পরবর্তী কম্পন (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে আফগানিস্তানে। তার মধ্যে অন্তত দু’টি কম্পনের মাত্রা ছিল ৫ এর বেশি। কম্পনের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর এবং দিল্লির আশপাশের এলাকাতেও কম্পন অনুভূত হয়।