Bankrupt

বৈভবের বাংলো বেচে দেন ঋণ মেটাতে! আমেরিকায় ধনী ভারতীয় দম্পতি এবং অষ্টাদশী কন্যার দেহ উদ্ধার

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, বাড়ির বাইরে থেকে কেউ এসে খুন করেননি। মনে করা হচ্ছে, ঋণে জর্জরিত হয়েই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাড়ির মালিক। সম্ভবত নিজেই খুন করেছেন বাকি দু’জনকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫৪
Share:

বাঁ দিক থেকে রাকেশ কমল, মেয়ে আরিয়ানা, স্ত্রী টিনা। ছবি: সংগৃহীত।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতি এবং তাঁদের একমাত্র কন্যার দেহ উদ্ধার। আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের অন্যতম অভিজাত এলাকার একটি বাংলো থেকে উদ্ধার হয়েছে তিন জনের দেহ। একটি বন্দুকও মিলেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, বাড়ির বাইরে থেকে কেউ এসে খুন করেননি। মনে করা হচ্ছে, ঋণের ভারে জর্জরিত হয়েই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাড়ির মালিক। সম্ভবত নিজেই খুন করেছেন বাকি দু’জনকে।

Advertisement

ম্যাসাচুসেটসের রাজধানী বস্টনের থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ডোভার। সেখানেই ১১টি বেডরুম নিয়ে বিশাল এক বাংলোয় থাকতেন রাকেশ কমল। সেই বাংলো থেকেই বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় ৫৭ বছরের রাকেশ, তাঁর স্ত্রী টিনা (৫৪) এবং ১৮ বছরের মেয়ে আরিয়ানার দেহ উদ্ধার হয়েছে। কমল পরিবার আদতে ছিলেন ভারতের বাসিন্দা। আমেরিকায় এসে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এর পর একটি শিক্ষা সংক্রান্ত সংস্থাও খুলেছিলেন। নাম ‘এডুনোভা’। সেই সংস্থাই মুখ থুবড়ে পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, চরম আর্থিক সঙ্কটের কারণেই এর পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দম্পতি।

আমেরিকার প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছিলেন রাকেশ। ২০১৬ সালে স্ত্রীর সঙ্গে এডুনোভা সংস্থাটি খুলেছিলেন। স্ত্রী টিনা ছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে, মিডল, হাই স্কুল এবং কলেজে পাঠরত পড়ুয়াদের ভাল ফলাফল করতে সাহায্য করার জন্য তৈরি হয়েছিল সংস্থাটি। প্রথম দিকে লাভ করছিল সংস্থা। ২০১৯ সালে ১৯ হাজার বর্গফুটের সেই বাংলো কিনেছিলেন রাকেশ। ১১টি বেডরুম রয়েছে তাতে। দাম পড়েছিল ৪০ লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকা।

Advertisement

রেকর্ড বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় সেই সংস্থা। বাংলোর ঋণ আর শোধ করতে পারেননি কমল দম্পতি। এক বছর আগে তা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই দম্পতি। ম্যাসাচুয়েটসের একটি সংস্থার ৩০ লক্ষ ডলারে কিনে নেয় সেই বাংলো। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৪ কোটি। যদিও সেই সময়ে তার দাম ছিল অনেক বেশি। ৫৪ লক্ষ ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হতে পারত সেই বাংলো। ভারতীয় মুদ্রায় ৪৫ কোটি টাকারও বেশি। বিক্রির পরেও সেই বাড়িতেই কমল পরিবার থাকছিলেন কি না, থাকলেও কী ভাবে থাকছিলেন, সে সব প্রশ্নের জবাব মেলেনি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টিনা দেউলিয়া হওয়ার কথা ঘোষণা করেন। পুলিশের অনুমান, এ সবের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিট নাগাদ পুলিশ একটি ফোন পায়। তাতে কমল পরিবারের এক আত্মীয় জানান, দীর্ঘ দিন তাঁদের খবর না পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু কেউ সাড়া দিচ্ছে না। এর পরেই ওই বাংলো থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাকেশের মেয়ে আরিয়ানা ভারমন্টে একটি বেসরকারি কলেজে পড়াশোনা করতেন। সেই কলেজের ফিও যথেষ্ট বেশি। আরিয়ানার স্কুলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি মিষ্টি, স্মার্ট এবং দয়ালু ছিলেন। এই ঘটনায় বিস্মিত ডোভার প্রশাসন। নরফক জেলার অ্যাটর্নির তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ দিন এই অভিজাত এলাকায় এ ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন