মধ্যবর্তী নির্বাচন

পরিবর্তন না-হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার

সেনেটের ১০০, আর হাউসের ৪৩৫! এর মধ্যে কার কত আসন, তা নিয়ে এত দিন বিশেষ মাথা ঘামাইনি। কিন্তু এ বার ভাবছি। দেশের পরিস্থিতিই এ বার ভাবতে বাধ্য করছে। আর মনে মনে চাইছি— হোক পরিবর্তন।

Advertisement

ইন্দ্রাক্ষী

নিউ জার্সি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৩
Share:

সেনেটের ১০০, আর হাউসের ৪৩৫! এর মধ্যে কার কত আসন, তা নিয়ে এত দিন বিশেষ মাথা ঘামাইনি। কিন্তু এ বার ভাবছি। দেশের পরিস্থিতিই এ বার ভাবতে বাধ্য করছে। আর মনে মনে চাইছি— হোক পরিবর্তন।

Advertisement

মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর। সেনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে ভোট হবে ৩৫টি আসনে। হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের ক্ষেত্রে আবার সব ক’টি, অর্থাৎ ৪৩৫টি আসনেই নির্বাচন। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে সেনেটে বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টনদের ডেমোক্র্যাট দলকে অন্তত দু’টি আসনে জিততেই হবে। এমনটা অসম্ভব নয়। বরং হাউসে লড়াইটা কঠিন। হাউসের দখল নিতে হলে বিরোধী পক্ষকে অন্তত ২৩টি আসনে জিততেই হবে।

যদি তা না হয়? তা হলে আমার ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার, সেই আশঙ্কাতেই ভুগছি। সেনেট বা হাউসের কোনও একটাতেও যদি রিপাবলিকানরা নিজেদের দখল টিকিয়ে রাখতে পারে, তা হলে সর্বনাশ। এক জন কলেজ পড়ুয়া হিসেবে ভয় পাচ্ছি, এ বার নারী-স্বাধীনতার উপরেও কোপ ফেলবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল।

Advertisement

নিজে মেয়ে বলে, আগে মেয়েদের কথা ভাবছি। রিপাবলিকানরাই আবার সবটা নিয়ন্ত্রণ করলে দেশে গর্ভপাত আইনের কী হবে? বেশির ভাগ স্টেটে গর্ভপাত এখন বেআইনি। দু’টিতে অনুমতি সাপেক্ষ। ধর্ষণের শিকার বা মায়ের স্বাস্থ্য সঙ্কট দেখা দিলে তবু কয়েকটি স্টেটে গর্ভপাত করানো যায়। কিন্তু আমার মতে, মেয়েদের এই অধিকারটা প্রাপ্য। নিজের শরীর নিয়ে কী করব, সেটা অন্য কেউ কেন ঠিক করে দেবে! এ নিয়ে আন্দোলনও চলছে।অথচ রিপাবলিকানদের একটা বড় অংশ গর্ভপাতে সায় দিতে নারাজ। তাই এ বার ডেমোক্র্যাটরা সেনেট বা হাউসে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে না-পারলে, কিচ্ছু হওয়ার নয়। নিজেদের অধিকার আদায়ে যেখানে যেখানে মেয়েদের পা পড়েছে, রিপাবলিকানরা নয়া
উদ্যমে সব চিহ্ন মুছে দেবে।

‘ওবামা-কেয়ার’ গোড়ায় তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। পরে খানিক সুর নরম করলেও রিপাবলিকানরা আদতে ‘ট্রাম্প-কেয়ার’ই আনতে চাইছেন। যাতে হাজার হাজার মানুষকে দিব্যি বিমা আওতার বাইরে ফেলে রাখা যায়! ট্রাম্প-শাসনে ইতিমধ্যেই গোল্লায় মানবাধিকার। ক্ষোভ জমছে শিক্ষা, শ্রম, কর ব্যবস্থা নিয়েও।

মন থেকে তাই চাইছি, আগামী মঙ্গলবার হোক ‘জঙ্গল সাফ করার দিন’। আর অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ
স্টেট-ভোটের দিকে। যেমন, টেক্সাস। এখানে রিপাবলিকান টেড ক্রুজ়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট বেটো ও’রুরকে। ক্রুজ় জিতলে, টেক্সাস একটুও নড়বে না। বরং আরও
পিছিয়ে যাবে। সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণেই এখানে অভিবাসন নিয়ে প্রশাসনের কড়াকড়ির ছবিটা মারাত্মক স্পষ্ট। রোজ দেখছি, কারণ ছাড়াই একে-তাকে আটকে রেখে, অন্যত্র পাঠিয়ে পরিবারগুলোকে ভেঙে
ফেলা হচ্ছে। বেটো না এলে ছবিটা বদলাবে কি?

এই ভোট আরও একটা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হল, এ বার দৌড়ে রয়েছেন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মহিলা প্রার্থী। এবং এঁরা প্রত্যেকেই স্বনামধন্য। অ্যারিজ়োনায় লড়াইটা জমবে। রিপাবলিকানদের এই শক্ত ঘাঁটিতে এ বার ডেমোক্র্যাটদের হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তিন দফার সেনেটর কার্স্টেন সিনেমা। অনেকেই বলছেন, তিনি পাশা উল্টে দিতে পারেন। সিনেমার বিপক্ষে রয়েছেন রিপাবলিকান মার্থা ম্যাকস্যালি। ইনি আবার দেশের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালক।

জোর লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জর্জিয়াতেও। এখানেও প্রতিপক্ষ দুই মহিলা। রিপাবলিকান ব্রায়ান
কেম্পের মুখোমুখি স্টেসি অ্যাব্রামস। কোনও ভাবে এখানে যদি ডেমোক্র্যাটরা জিতে যান, তা হলে অ্যাব্রামসই হবেন দেশের প্রথম মহিলা গভর্নর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন