(বাঁ দিকে) ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এবং (ডান দিকে) তাঁর প্রধান উপদেষ্টা আলি শামখানি। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েলি হামলায় গত ১৩ জুন ‘মৃত্যু হয়েছিল’ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের প্রধান উপদেষ্টা আলি শামখানির! শুধু ইজ়রায়েলি সেনা নয়, ইরানেরও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই দাবি করা হয়েছিল। ঘটনার দু’সপ্তাহ পরে সেই ‘মৃত’ উপদেষ্টা ইরানের এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন! জানালেন, ইজ়রায়েলকে ভয় পান না। কী ভাবে ইজ়রায়েলি হামলার পরে তিনি বেঁচে গেলেন, তার ব্যাখ্যাও দেন শামখানি।
গত ১৩ জুন থেকে নতুন করে ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে সামরিক অস্থিরতা শুরু হয়। দুই দেশের যুদ্ধ চলাকালীন ইজ়রায়েলের নিশানা ছিল ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি। তবে বাদ পড়েননি সে দেশের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তা, সেনা আধিকারিক এবং পরমাণু বিজ্ঞানীরাও। প্রথম দিনের হামলাতেই শামখানির মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রথমে দাবি করে ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। পরে ইরানেরও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একই দাবি করা হয়। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে জানা যায়, শামখানি মারা যাননি। ইজ়রায়েলি হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে তাঁর বাড়ি ফেরার পর ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলি বিবৃতি দিয়ে জানায়, শামখানি বেঁচে আছেন! তিনি নিজেও এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানান, ইজ়রায়েলি হামলার দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা রয়েছে ইরানের।
এ বার শামখানির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে এল। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই সাক্ষাৎকারটি ইরানের এক টিভি চ্যানেলকে দিয়েছেন শামখানি। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১৩ জুন ভোরে কী ঘটেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন যখন ইজ়রায়েলের হামলা শুরু হয়, তখন আমি সবে ঘুম থেকে উঠেছি। প্রার্থনা করার সময় হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির সবাই তখন ঘুমোচ্ছিল। আচমকাই আমার গোটা বাড়ি ভেঙে পড়ে।’’ শামখানি জানান, কিছু ক্ষণের জন্য তিনি জ্ঞান হারিয়েছিলেন। তবে যখন জ্ঞান ফিরে আসে, তখন দেখেন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। তিন ঘণ্টা ওই অবস্থায় পড়েছিলেন। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। শামখানি বলেন, ‘‘ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে বার হওয়ার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি। অনেক ক্ষণ পর উদ্ধারকারী দলকে দেখতে পাই। তখন তাদের উদ্দেশে বলেছিলাম ‘আমি এখানে আছি!’ আমার চিৎকার শুনে উদ্ধারকারী দল এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’’
এর আগে শনিবার শামখানিকে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল। ইজ়রায়েলি হামলায় নিহত ইরানের সেনা আধিকারিক এবং পরমাণু বিজ্ঞানীদের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাঁকে। তার পরেই তাঁর সাক্ষাৎকারের বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।