সামাজিক স্বীকৃতির প্রশ্ন বিচারের দায়িত্বটা এ বার সমাজই তুলে নিল। নিতান্ত কোনও আইন পাশ করে বদল নয়, সারা দেশ অংশগ্রহণ করল গণভোটে। সমকামী দম্পতিরা অন্য বিবাহিতদের মতোই সামাজিক মর্যাদা পাবেন কি না— সে প্রশ্নের উত্তর দিতে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোট দিল আয়ার্ল্যান্ডবাসী। বিশ্বের অন্যান্য ১৮টি দেশে সমকামী বিয়ে স্বীকৃত হলেও এ ভাবে গণভোটের নজির নেই কোথাও। শনিবার জানা যাবে ভোটের ফল।
বিতর্ক চলছিল বহু দিন ধরেই। ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ এই দু’টো প্রশ্নে ভাগ হয়ে গিয়েছিল সমাজ। তবে ২০১০ থেকেই আয়ার্ল্যান্ডে লিভ ইন করার আইন মিলেছে সমকামীদের। কিন্তু বিয়ে? সে বিষয়ে অবশ্য রয়ে গিয়েছে লাল ফিতের ফাঁস। তাই সে জট ছাড়াতে এ বার গণভোটকেই বেছে নিয়েছে আয়ার্ল্যান্ডবাসী। আসলে বিয়ের নিয়মকানুন সংবিধানের আওতায় পড়ে। এবং আইন পাশ করে সংবিধানের কোনও বিষয়ে বদল আনা সম্ভব নয়।
ক্যাথলিক রাষ্ট্র আয়ার্ল্যান্ড। কিন্তু তা সত্ত্বেও রোমান ক্যাথলিক গির্জার বিরোধিতা ধোপে টেকেনি সামাজিক স্রোতের কাছে। ভোটের আগে যে সব জনমত সমীক্ষা হয়েছে, সবার মতে ‘হ্যাঁ’-এর পাল্লাই ভারী। অর্থাৎ সমকামী দম্পতিদেরও অন্য বিবাহিতদের মতোই সব ধরনের সুযোগসুবিধা পাওয়া উচিত। কিন্তু বিরোধীরা তাও আশা ছাড়ছেন না এখনই। তাঁরা ভাবছেন, শেষ মুহূর্তে ‘ধর্মীয় বা সামাজিক কারণের’ কথা ভেবে হয়তো অনেকেই তাঁদের মত বদলাবেন। সমকামী বিয়ের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।
তবে দেশে ভোটের আবহাওয়া কিন্তু অন্য কথাই বলেছে। বহু প্রবাসী আয়ার্ল্যান্ডবাসীরা আজ দেশে এসেছেন শুধুমাত্র ভোট দিতে। যেমন সিডনি থেকে এসেছেন মার্ক গভার্ন। তিনি বলেছেন, ‘‘সমকামীদের সুযোগসুবিধা দেওয়ার বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে আয়ার্ল্যান্ড। আর যদি এই ভোটটা পাশ হয়ে যায় তা হলে অন্য দেশের উপরেও তা যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করবে।’’ ভোট দিয়েছেন ট্যাক্সিচালক জন কুইন। ‘হ্যাঁ’-ই রায় দিয়েছেন তিনি। তবে সারা দেশের রায় জানা যাবে শনিবার। যে দিকে শুধু আয়ার্ল্যান্ড নয়, তাকিয়ে তামাম দুনিয়া।