ধর্ষণের মামলায় উত্তাল ডাবলিন

দেশের আদালতে ধর্ষণে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ২৭ বছরের যুবকটি ছাড় পেয়ে গিয়েছে। তাতে আরও খেপে গিয়েছে আয়ারল্যান্ড। হাজার হাজার মহিলা টুইটারে নিজেদের অন্তর্বাসের ছবি দিয়ে হ্যাশট্যাগ (#) দিসইসনটকনটেস্ট (এটা সম্মতি নয়) লিখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ডাবলিন (আয়ারল্যান্ড) শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ধর্ষিত কিশোরী নিম্নাঙ্গে ‘নজরকাড়া’ অন্তর্বাস পরেছিল— বিপক্ষের আইনজীবী এই মন্তব্য করে যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘এতেই বেশ বোঝা যাচ্ছে মেয়েটির যৌন সম্পর্কে সম্মতি ছিল।’ আপত্তিকর এই মন্তব্য নিয়ে ঝড় উঠেছে আয়ারল্যান্ডে।

Advertisement

দেশের আদালতে ধর্ষণে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ২৭ বছরের যুবকটি ছাড় পেয়ে গিয়েছে। তাতে আরও খেপে গিয়েছে আয়ারল্যান্ড। হাজার হাজার মহিলা টুইটারে নিজেদের অন্তর্বাসের ছবি দিয়ে হ্যাশট্যাগ (#) দিসইসনটকনটেস্ট (এটা সম্মতি নয়) লিখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

ঘটনাটি ৫ নভেম্বরের। কর্ক-এর সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল কোর্টে খালাস করে দেওয়া হয় ওই যুবককে। রাস্তায় ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর হয়ে কোর্টে দাঁড়ানো মহিলা আইনজীবী এলিজ়াবেথ ও’কনেল বিচারকমণ্ডলীর কাছে বলেছিলেন, ‘‘অভিযুক্তের প্রতি মেয়েটি আকৃষ্ট হয়েছিল— সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে এই সম্ভাবনা কি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়? মেয়েটি কী পরেছিল সেটাও দেখতে হবে। নকশা কাটা থং (অন্তর্বাস) ছিল তার দেহে।’’

Advertisement

আট পুরুষ এবং চার মহিলার বিচারকমণ্ডলী ৯০ মিনিটের শুনানি শেষে সর্বসম্মত ভাবে রায় দিয়ে ওই যুবককে মুক্তি দেন। কিন্তু ও’কনেলের মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান নারী অধিকার রক্ষায় যুক্ত কর্মীরা। ধর্ষণের বিচার যে ভাবে হচ্ছে, তা পাল্টানোর দাবি ওঠে। গত মঙ্গলবার এই প্রতিবাদ ছুঁয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টকেও। পশ্চিম ডাবলিন থেকে নির্বাচিত নিম্ন কক্ষের সদস্যা রুথ কপিঙ্গার বিতর্কের সময়ে পার্লামেন্টে থং নিয়ে আসেন। পরে বলেন, ‘‘এখানে এই অন্তর্বাস দেখানো লজ্জাজনক মনে হলেও আমি বলতে চাই, একবার ভেবে দেখুন, কোর্টে সেটা প্রমাণ হিসেবে হাজির করার পরে ধর্ষিতার মনের অবস্থা কী হয়েছিল।’’ বুধবার ডাবলিনের পথে নেমে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন রুথ। তাঁদের স্লোগান ছিল, ‘কোর্টে নির্যাতিতাকে দোষারোপ করা বন্ধ হোক।’ কর্ক-এর সেই আদালতের সিঁড়িতে অন্তর্বাস বিছিয়ে সেখানে মিছিল করেন দু’শো জন।

বিক্ষোভের মুখে আয়ারল্যান্ডের বিচার ও সাম্যের মন্ত্রী চার্লি ফ্ল্যানাগান জানিয়েছেন, যে ভাবে ধর্ষণের মামলার বিচার হয়, তা নিয়ে আইন পাল্টাতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ‘রিভিউ কমিটি’ গড়ে তার মতামত নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন