ভারত শুধু গরিবের দেশ, অস্ট্রেলিয়ার কাগজে এ কী কার্টুন!

ভারত দরিদ্র দেশ, সাপ ও ভিক্ষুকদের আনাগোনা রাস্তা জুড়ে। বেশিরভাগ উন্নত দেশগুলির চোখে এই চিরাচরিত ছবিতে বদল ঘটলেও এখনও এই ইমেজ দেখিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বের কয়েকটি দেশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৪:১২
Share:

ভারত দরিদ্র দেশ, সাপ ও ভিক্ষুকদের আনাগোনা রাস্তা জুড়ে। বেশিরভাগ উন্নত দেশগুলির চোখে এই চিরাচরিত ছবিতে বদল ঘটলেও এখনও এই ইমেজ দেখিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বের কয়েকটি দেশ। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রে ভারতীয়দের নিয়ে প্রকাশিত এক ব্যঙ্গচিত্রকে ঘিরে তুমুল বির্তক শুরু হয়েছে। ওই কার্টুনে দেখা যাচ্ছে, কয়েক জন শীর্ণকায়, ক্ষুধার্ত ভারতীয় আমের চাটনি দিয়ে সোলার প্যানেল খাওয়ার চেষ্টা করছে। এটি প্রকাশিত হওয়ার পরই জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে ওই সংবাদপত্রে বিরুদ্ধে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সমালোচকেরা আসলে ‘জোকস’ বুঝতে পারেন না। গোটা ঘটনা নিয়ে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া।

Advertisement

আরও পড়ুন: জলবায়ু খসড়া পেশ, সবুজ সঙ্কেত দিল্লির

উষ্ণায়ণে দায়ী উন্নত বিশ্ব, শিকার ভারত, কড়া বার্তা নরেন্দ্র মোদীর

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ান-আমেরিকান ধনপতি রুপার্ড মার্ডকের মালিকানাধীন ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’-এ ওই কার্টুন ছাপা হয়েছেন প্যারিসে সদ্যসমাপ্ত বায়ুর সম্মেলনের খসড়াকে লক্ষ্য রেখে। ওই সম্মেলনে প্রস্তাব করা হয়, বিশ্ব উষ্ণায়ন ঠেকাতে আরও অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে উন্নত দেশগুলিকে। উষ্ণায়ন কমাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের মাত্রা কমানো ছাড়াও তা ২ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবের সপক্ষে সহমত হয় ভারত-সহ আমেরিকা ও চিনের মতো শক্তিধর দেশ। গোটা প্রস্তাবে উন্নয়নশীল দেশগুলির তরফে মূল ভূমিকা নেয় ভারত। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, এর পরই কি সরাসরি ভারতকে আক্রমণ করা হচ্ছে? সিডনির ম্যাককোয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক অ্যামান্ডা ওয়াইজ মনে করেন, কার্টুনটি খুবই ‘শকিং’। জাতিবিদ্বেষী তো বটেই, উন্নয়নশীল দেশগুলি গতে বাঁধা প্রতিচ্ছবিই এই কার্টুনে ফুটে উঠেছে বলে মনে করেন অ্যামান্ডা। আমেরিকা, কানাডা বা ব্রিটেনে এ ধরনের কার্টুন যে সহ্য করা হত না তা-ও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।

সমালোচকদের দাবি, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি যে প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে আছে, এটাই যেন ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে এই কার্টুনের মাধ্যমে। অথচ, প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রণী দেশ এখন ভারত। অ্যামান্ডার দাবি, কার্টুনের মধ্যে দিয়ে এটা যেন বোঝানো হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি নয়, ভারতে খাদ্যের প্রয়োজন।

বিতর্ক শুরু হতেই তা খণ্ডন করতে লিখিত বিবৃতি জারি করেছেন ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ কর্তৃপক্ষ। গোটা বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্রকারের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, অস্ট্রেলীয় সমাজের বাক্‌-স্বাধীনতার প্রতি তাঁরা দায়বদ্ধ। পাশাপাশি তাঁদের দাবি, ভারতীয়দের হেয় করার উদ্দেশ্যে নয়, জলবায়ু সম্মেলনের হোতাদের এটা জানানো যে, সোলার প্যানেলের বদলে দরিদ্রদের সস্তায় বিদ্যুৎ ও সাহায্যের প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন