ইস্তানবুলে হামলার দায় নিল আইএস

তাদের উপরই সন্দেহ ছিল সবচেয়ে বেশি। শেষ পর্যন্ত ইস্তানবুলের নাইটক্লাবে হামলার দায় স্বীকার করল ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। নিজেদের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই জেহাদি সংগঠন দাবি করেছে, তাদেরই এক সদস্য বর্ষশেষের রাতে বসফরাস ঘেঁষা অভিজাত নাইটক্লাবে হামলা চালিয়ে ৩৯ জনকে মেরে ফেলেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

ইস্তানবুলে নিহতদের স্মৃতিতে। সোমবার বার্লিনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে এএফপির ছবি।

তাদের উপরই সন্দেহ ছিল সবচেয়ে বেশি। শেষ পর্যন্ত ইস্তানবুলের নাইটক্লাবে হামলার দায় স্বীকার করল ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। নিজেদের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই জেহাদি সংগঠন দাবি করেছে, তাদেরই এক সদস্য বর্ষশেষের রাতে বসফরাস ঘেঁষা অভিজাত নাইটক্লাবে হামলা চালিয়ে ৩৯ জনকে মেরে ফেলেছে। এর আগেও এই ধরনের বহু হামলার দায় টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করেছে আইএস। ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিরিয়া ও ইরাকে আইএস-বিরোধী সামরিক অভিযানের জন্য তুরস্ক সরকারের উপর এ ভাবেই প্রতিশোধ নেওয়া হল বলেও ওই বার্তায় দাবি করেছে তারা।

Advertisement

তবে ঘটনার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত আসল অপরাধীকে ধরতে পারেনি তুরস্ক সরকার। আইএসের দাবি নিয়ে সরকারি ভাবে কেউ মুখও খোলেননি। সেই রাতের আততায়ীর একটি সাদা কালো আবছা ছবি প্রকাশ করেছে তুরস্ক পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া সেই ছবিই এখন পলাতক বন্দুকবাজের নাগাল পাওয়ার রাস্তা বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত তার খোঁজে তুরস্কের অলিগলিতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আজ দাবি করেছে, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ৭ জনকে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যেই কেউ আসল অপরাধী কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।

কী ভাবে পালাল আততায়ী? পুলিশের বক্তব্য, সান্তা ক্লজের পোশাক পরা বন্দুকবাজ হামলা চালানোর পরে পোশাক বদলিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে নাইটক্লাব থেকে বেরিয়ে যায়। পুলিশ মনে করছে, আইএসের ‘লোন উল্ফ’ বন্দুকবাজ আদতে কিরগিজস্তান বা উজবেকিস্তানের বাসিন্দা। কী ভাবে বা কত দিন ধরে সে তুরস্কে রয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশও। এর্দোগান সরকার জানিয়েছে, রেইনা নাইটক্লাবের হামলায় যে ৩৯ জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২৫ জনই বিদেশি। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগ আরবের বাসিন্দা।

Advertisement

যে দুই ভারতীয় ওই হামলায় মারা গিয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্র। কালই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ টুইটে জানিয়েছিলেন, নিহতদের পরিবারকে সে দেশে গিয়ে দেহ নিয়ে আসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। তুরস্কে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রাহুল কুলশ্রেষ্ঠর সঙ্গেও বিদেশ মন্ত্রক যোগাযোগ করেছে। তাঁকে নিহত আবিস রিজভি ও খুশি শাহের পরিবার ইস্তানবুল পৌঁছনোর পর তাঁদের দেখভাল এবং সব রকম সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন সুষমা। সূত্রের খবর, গুজরাতের বডোদরার বাসিন্দা খুশির ভাই অক্ষয় শাহ এবং তুতো-ভাই হিরেন চহ্বাণ এবং আবিসের বাবা আখতার হাসান রিজভি ও তাঁর স্ত্রী আজই ইস্তানবুল পৌঁছেছেন। আজ টুইট করে খুশির পরিবারকে সমবেদনা জানান গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার খুশি আমেরিকা থেকে পাশ করে দেশে ফেরার পর মুম্বইয়ে থাকতেন। টুইটারে বন্ধু খুশির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টি ও তাঁর স্বামী রাজ কুন্দ্রাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন