পালমাইরা ধ্বংস হয়েছে। এ বার জঙ্গি নিশানায় মিশর— আগেই সে কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। তার দেখানো পথেই যে অনুগামীরা হাঁটছে, হাতে নাতে মিলল সে প্রমাণ। সিরিয়া-ইরাকের পর এ বার নজরে মিশর— প্রমাণ দিয়েছে পশ্চিম এশিয়ার ওই জঙ্গিগোষ্ঠী। সিনাই উপদ্বীপে আইএসের একটি জঙ্গিঘাঁটির অন্দরমহলের ছবি সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা।
ওই ছবিতে দেখা গিয়েছে, কালো পোশাকে আপাদমস্তক ঢেকে কেউ এক লাফে পেরোচ্ছে ধাতুর তৈরি আগুন-বলয়, কেউ বা এক গুলিতেই উড়িয়ে দিচ্ছে নিশানা। সিনাইয়ের ধু ধু মরুভূমির মাঝখানে এই শিবির। নামকরণ হয়েছে মিশরের জঙ্গি আবু হাজার আল-মাসরির নামে। ছবিতে, ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গিয়েছে। আর এই ছবি সামনে এসে জনমানসে উস্কে দিয়েছে এই সিনাই উপদ্বীপেই রুশ বিমানকে গুলি করে নামানোর ঘটনার স্মৃতি। গত অক্টোবরে মাঝ আকাশে বিস্ফোরণ ঘটে ওই রুশ বিমানে। মারা যান ২২৪ জন যাত্রী। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করে দেন, যারা এ কাজ করেছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে। আইএসের তরফে জানানো হয়, সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে সেখানে রুশ বিমানের হামলা চালানোর বদলা নিতেই সিনাইয়ের হামলা। যদিও সিনাই প্রশাসনের তরফে সে কথা অস্বীকার করা হয়। জানানো হয়, মাটি থেকে গুলি করে বিমান উড়িয়ে দেওয়ার মতো প্রযুক্তি সিনাইয়ের কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছে নেই। তদন্তকারীরা উপগ্রহচিত্রেও বিস্ফোরণের ছবি দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করে ক্রেমলিন। জরুরি ভিত্তিতে মার্কিন কূটনীতিকদের সিনাইয়ে যাতায়াতের উপর তড়িঘড়ি নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। তবে সিনাইয়ে জঙ্গি-উপস্থিতি নিয়ে চলতে থাকে টানাপড়েন। সিনাইয়ে চোখে পড়ার মতো কমতে থাকে পর্যটকের সংখ্যা।
এ বার অবশ্য আর ভাবনার অবকাশ রাখেনি আইএস। সোজাসাপটা ভাবে গোষ্ঠীর লক্ষ্য ঘোষণা করে দেখিয়ে দিয়েছে, কী ভাবে নাশকতার প্রশিক্ষণ জোরকদমে চলছে সিনাইয়ের মাটিতে।
যদিও জঙ্গিঘাঁটি বা নাশকতা মিশরে নতুন ঘটনা নয়। গত জানুয়ারিতে হুড়গাদার একটি হোটেলে হামলা চালায় দুই আইএস জঙ্গি। আর জঙ্গিদের ছবি সামনে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিনাইয়ের সরকার। জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা কড়া করার কথা ভাবা হচ্ছে।