ইজ়রায়েলি হানায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজ়া। ছবি: রয়টার্স।
গাজ়া ভূখণ্ডে হামাসকে মোকাবিলার কথা বলে আদতে সাধারণ গৃহস্থদের বাড়ি ধ্বংস করছে ইজ়রায়েল। গত মার্চ মাসে হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির চুক্তি থেকে সরে আসার পর গাজ়ায় হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, গাজ়া ভূখণ্ডে কী ভাবে কয়েক হাজার মানুষের বসতবাড়ি বুলডোজ়ার কিংবা বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, গাজ়া ভূখণ্ডের দক্ষিণে রাফা শহরের অধিকাংশ বাড়ি, বহুতল ভেঙে গুঁড়়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল থেকে এই ধরনের হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। বড় বা়ড়ি কিংবা বহুতল ভাঙতে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহার করা হয়েছে বুলডোজ়ার।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন বিশেষজ্ঞদের কয়েক জনকে উদ্ধৃত করে বিবিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইজ়রায়েলি সেনার এই কাজ আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। ওই বিশেষজ্ঞরা জেনেভা সম্মেলনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জানিয়েছেন, যুদ্ধের সময় কয়েকটি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া কোনও অবস্থাতেই সাধারণ মানুষের জীবন এবং তাঁদের সম্পত্তির উপর হামলা চালানো যায় না। ইজ়রায়েল এই মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে দাবি তাঁদের।
ইজ়রায়েলের অবশ্য দাবি, বিভিন্ন বাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র মজুত রেখেছে হামাস। সেই কারণে কার্যত বাধ্য হয়েই তারা সেগুলি ধ্বংস করছে। গত জুলাই মাসে ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাট্জ় জানিয়েছিলেন, গাজ়ার রাফা এবং অন্য শহরগুলিতে ধ্বংসস্তূপের উপর নতুন ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলা হবে। সেই শহরে অন্তত ৬ লক্ষ প্যালেস্টাইনি বসবাস করতে পারবে বলে জানান তিনি। ইজ়রায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট অবশ্য ইজ়রায়েলের ওই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে বলেন, “বন্দিশিবির তৈরির চেষ্টা চলছে।”