বদলা: গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হামিদের বাড়িতে। রামাল্লায়। এপি
সাত মাস হল, জেলে বন্দি রামাল্লার বাসিন্দা ইসলাম আবু হামিদ। এক ইজ়রায়েলি সেনাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
গত মে মাসে রামাল্লার একটি শরণার্থী শিবিরে হানা দিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। প্যালেস্তাইনিদের উপরে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হামিদ পাথর ছুড়েছিল ও-দেশের সেনাকর্তা রনেন লুব্রাস্কিকে। তিনি মারা যান। চুপ করে বসে থাকেনি ইজ়রায়েলের সেনা। প্যালেস্তাইনি অধ্যুষিত রামাল্লা শহর তোলপাড় করে গ্রেফতার করা হয় হামিদকে।
সেনার আক্রোশ অবশ্য এতে কমেনি। গত কয়েক দিন ধরেই চাপা উত্তেজনা ছিল রামাল্লায়। শনিবার রাতভর আল-আমারি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি বাহিনী ও সীমান্ত পুলিশ। এই রাতেই বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হল হামিদের বাড়ি।
বিস্ফোরণের আগে ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল তাঁর বাড়ি। এমনকি আশপাশের বাড়ি থেকেও লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। হামিদের পড়শিরাই জানালেন, বাচ্চা-বুড়ো কয়েকশো মানুষকে মাঝরাতের কনকনে ঠান্ডায় বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। জড়ো করা হয় একটু দূরে একটা ময়দানে। হামিদের বাড়ির কাছেই থাকেন সামির আল-তুখি। বাড়িছাড়া হতে হয়েছিল তাঁকেও। বললেন, ‘‘হাড়কাঁপানো ঠান্ডা। প্রবীণরাই শুধু নন, অনেক বাচ্চা-মহিলাও অসুস্থ হয়ে পড়েন।’’
হামিদের বাড়িতে হামলা অবশ্য এই প্রথম নয়। এই নিয়ে তৃতীয় বার ভাঙা হল। সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম করার অভিযোগে ইজ়রায়েলি পুলিশের হেফাজতে হামিদের পরিবারের অনেকেই। এক জনকে জেলে খুনও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সন্তান কাছে নেই, হামিদের ঘরহারা বৃদ্ধা মা লতিফা বললেন, ‘‘ওরা ঘর ভেঙেছে। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম বার ওরা যখন বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল, আমরা নতুন করে তৈরি করেছিলাম। দ্বিতীয় বার ভাঙল, দ্বিতীয় বার গড়লাম। একশো বার, হাজার বার ভাঙবে, আমরা তৈরি করব। ওরা ভাঙবে...।’’ হামিদ অবশ্য একা নন। ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে যাঁরা রুখে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদেরই এক পরিণতি, অভিযোগ লতিফাদের।