ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। — ফাইল চিত্র।
লেবাননে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ লেবাননে এল হামামেস এলাকায়। ইজ়রায়েলি বাহিনীর দাবি, ওই হামলা ইচ্ছাকৃত নয়। খারাপ আবহাওয়ার জন্য তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর দুই সৈন্যকে চিনতে পারেননি। তাই সন্দেহজনক গতিবিধি ভেবে গুলি চালিয়েছে তারা। ইজ়রায়েলি বাহিনীর এই কাণ্ডে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ঘটনাটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনী।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে লেবানন-ইজ়রায়েল সীমান্তবর্তী এলাকায় এল হামাসেসে দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তির উপর আচমকাই গুলি চালায় ইজ়রায়েলি বাহিনী। গুলি চালানোর পরে ইজ়রায়েল বুঝতে পারে, ওই দু’জন রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্য। ইজ়রায়েলি বাহিনীর দাবি, খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা ওই দুই জওয়ানকে চিনতে করতে ভুল করেছিল। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইজ়রায়েল।
অন্য দিকে লেবাননে নিযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের বাহিনী এই ঘটনাকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন বলে দাবি করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে, লেবাননের সামরিক বাহিনী এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের বাহিনী— শুধুমাত্র এই দু’টি বাহিনীই দক্ষিণ লেবাননে সক্রিয় থাকবে। কিন্তু ইজ়রায়েলি বাহিনী ওই বিধি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ। রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর বক্তব্য, লেবাননের ভূখণ্ডে ট্যাঙ্ক নিয়ে প্রবেশ করে সৈন্যদের দিকে গুলি চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। শান্তিরক্ষা বাহিনীর সৈন্যরা পায়ে হেঁটেই যাচ্ছিলেন। ওই সময় আচমকাই তাঁদের থেকে পাঁচ মিটার দূরে ভারী ‘মেশিনগান’ দিয়ে গুলি চালায় ইজ়রায়েলি সেনা।
ঘটনার পরে বিবৃতি দিয়েছে লেবাননের সামরিক বাহিনীও। তারাও তেল আভিভকে নিশানা করে বলেছে, ইজ়রায়েল তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। লেবাননের বাহিনীকে দক্ষিণ প্রান্তে মোতায়েন করার ক্ষেত্রেও ইজ়রায়েল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা।
এক দিকে যখন লেবাননে রাষ্ট্রপুঞ্জের বাহিনীর উপর হামলার অভিযোগ উঠছে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে, তখন প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিরুদ্ধে ফের নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে প্যালেস্টাইন সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে নেতানিয়াহুর এই অবস্থান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।