ইজ়রায়েলি যুগলের পুর্নমিলন দু’বছর পর। বন্দি ছিলেন হামাসের হাতে। ছবি: সংগৃহীত।
৭৩৮ দিন। ১৭ হাজার ৭১২ ঘণ্টা। হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে কান্না আর আবেগে ভাসলেন যুগল। পুনর্মিলন হল তাঁদের। নোয়া অগ্রমণি এবং অ্যাভিনাটান ওর। সোমবার ইজ়রায়েল-হামাসের বন্দি প্রত্যর্পণে মুক্তি পান ২০ জন ইজ়রায়েলি। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বছর বত্রিশের অ্যাভিনাটান।
তাঁর প্রেমিকা নোয়া। বন্দি প্রত্যর্পণের খবর পেয়ে ইজ়রায়েল-গাজ়ার সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে হাজির ছিল অ্যাভিনাটানের গোটা পরিবার। সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। আনন্দ আর আবেগের বাঁধ ভাঙল অ্যাভিনাটানকে সুস্থ, স্বাভাবিক ভাবে ফিরতে দেখে। কান্নায় ভেঙে পড়েন ইজ়রায়েলি যুবকের প্রেমিকা নোয়া। যুগলের আলিঙ্গন, চুম্বন এবং পুনর্মিলনের মধুর সেই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছে ইজ়রায়েলি সেনা।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর অগ্রমণি এবং তাঁর প্রেমিক অ্যাভিনাটান দক্ষিণ ইজ়রায়েলে গিয়েছিলেন নোভা সঙ্গীত উৎসবে শামিল হতে। কিন্তু ওই দিনই হামাসের হামলায় সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে যখন সকলে এ দিক ও দিক দৌড়োচ্ছেন, অগ্মণি এবং অ্যাভিনাটানও পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দু’জনেই আলাদা আলাদা ভাবে হামাসবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তার পর পণবন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে দু’জনের কেউ কারও মুখ দেখেননি, কোথায় রয়েছেন তা-ও দু’জনের কেউ জানতে পারেননি। তার পর থেকে শুরু হয় ইজ়রায়েল-হামাসের সংঘর্ষ। একের পর এক মৃত্যু, ধ্বংস, বোমাবর্ষণ, হামলা চলছিলই। ইজ়রায়েল বাহিনী পণবন্দিদের মুক্ত করার জন্য সামরিক অভিযান শুরু করে গাজ়া এবং প্যালেস্টাইনে। গত বছরের জুনে অগ্রমণিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ইজ়রায়েলি সেনা। কিন্তু অ্যাভনাটানের কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। অগ্রমণি লেখেন, ‘‘যখন হামলা হয়েছিল, শয়ে শয়ে মানুষ মাঠ ধরে ছুটছিলেন। এলোপাথাড়ি গুলি চলছিল। চোখের সামনে এক এক করে কত জনকে যে গুলিবিদ্ধ হয়ে থুবড়ে পড়তে দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই। ওই দিন শেষ বারের মতো অ্যাভিনাটানকে দেখেছি। তার পর বন্দি অবস্থায় যেখানে গিয়েছি ওর খোঁজ করেছি। জানতাম না, অ্যাভনাটান আদৌ বেঁচে আছে কি না।’’
অগ্রমণি জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে দুঃস্বপ্নের মধ্যে কাটিয়েছেন প্রতিটা মুহূর্ত। বন্দি অবস্থায় নির্মম অত্যাচার দেখেছেন। প্রতিটা দিন যেন এক একটি বছরের মতো মনে হচ্ছিল তাঁর। তার মধ্যেও বাঁচার স্বপ্ন দেখেছেন। আর প্রার্থনা করে গিয়েছেন যেন অ্যাভনাটানের সঙ্গে আবার তাঁর দেখা হয়। অগ্রমণির কথায়, ‘‘দু’বছর অপেক্ষার পর সেই আশা পূর্ণ হল।’’ অ্যাভিনাটানকে কাছে পেয়ে আনন্দ আর আবেগে ভাসলেন অগ্রমণি। উচ্ছ্বসিত অ্যাভিনাটানের গোটা পরিবার।