সম্রাট আকিহিতো।
অসুস্থতার কারণে নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না বলে বছর দু’য়েক আগেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জাপানের সম্রাট আকিহিতো। তাঁর সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নতুন আইনও করে জাপানের পার্লামেন্ট। আজ রাজপ্রাসাদের ‘রুম অব পাইন’-এ শিন্টো ধর্মের প্রথা মেনে সিংহাসন পরিত্যাগ করলেন অশীতিপর সম্রাট। পাশে ছিলেন স্ত্রী, সম্রাজ্ঞী মিচিকো। উপস্থিত ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-সহ মোট ৩০০ জন ‘হাইপ্রোফাইল’ অতিথি।
২০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জাপানের কোনও সম্রাট স্বেচ্ছায় সিংহাসন ছাড়লেন। ৮৫ বছরের আকিহিতোর সঙ্গেই শেষ হচ্ছে জাপানের হেইসেই যুগ। জাপানের রাজনীতিতে রাজপরিবারের সক্রিয় ভূমিকা না থাকলেও দেশের আনুষ্ঠানিক প্রধান হলেন সম্রাট। আজ মধ্যরাত থেকে সিংহাসনে বসতে চলেছেন আকিহিতোর ছেলে নারুহিতো। এর সঙ্গেই শুরু হচ্ছে জাপানের নতুন রেইওয়া যুগ। যার অর্থ ‘অপূর্ব সমন্বয়’।
৫৯ বছরের নারুহিতো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি ও তাঁর স্ত্রী যুবরানি মাসাকো-র একমাত্র সন্তান আইকো। জাপানের রাজপরিবারে কোনও কন্যাসন্তান সিংহাসনে বসতে পারেন না। তাই নারুহিতোর পরে সম্রাট হতে পারেন তাঁর ভাই যুবরাজ ফুমিহিতো। তাঁর পরে সিংহাসনে বসার অধিকার রয়েছে একমাত্র তাঁর ছেলে যুবরাজ হিসাহিতোর।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সম্রাট সমাচার
বিশ্বের একমাত্র জীবিত সম্রাট আকিহিতো জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৩ রাজত্বকাল: জানুয়ারি, ১৯৮৯-এপ্রিল, ২০১৯ বাবা: সম্রাট হিরোহিতো মা: সম্রাজ্ঞী নাগাকো স্ত্রী: সম্রাজ্ঞী মিচিকো পুত্র: নারুহিতো, ফুমিহিতো কন্যা: সায়াকো কুরোদা
টানা তিরিশ বছর সম্রাটের দায়িত্ব পালন করেছেন আকিহিতো। ২০১২ সালে বাইপাস অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। এর পরেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০১৬ সালে নিজেই পদত্যাগের ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন আকিহিতো। রাজপরিবারের আগল ভেঙে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার রীতি তিনিই প্রথম চালু করেন। স্ত্রীকে পাশে নিয়ে মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসে সুনামি আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলার ছবি আজও মনে রেখেছেন জাপানবাসী। বিদায়ী ভাষণে আজ দেশবাসীকে ভাল থাকার বার্তাই দিয়েছেন আকিহিতো। বলেছেন, ‘‘জাপানের মানুষ যে আমাকে এত বছর ধরে এ ভাবে ভালবেসে এসেছেন, তার জন্য তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আর আমার স্ত্রী চাই, এ দেশের এবং গোটা বিশ্বের মানুষ আনন্দে থাকুন, ভাল থাকুন।’’ বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সম্রাটকে বিদায় জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার হাজার অনুরাগী।