Older Person in Japan

শতায়ুর সংখ্যায় লাখ ছুঁইছুঁই জাপানে, নতুন তথ্য প্রকাশ করল সরকার! বেশি দিন বাঁচার রহস্য কী?

জাপানে সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিক হলেন এক মহিলা। তাঁর বয়স ১১৪। নাম শিগেকো কাগাওয়া। জাপানে সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের নাম কিয়োতাকা মিজুনো। শিগেকোর থেকে তিনি তিন বছরের ছোট।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৪
Share:

জাপানে সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিক শিগেকো কাগাওয়া। — ফাইল চিত্র।

বয়স শুধুই সংখ্যামাত্র! ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যার গড় বিচারে আবার এক বার গোটা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষের দিকেই থাকল জাপান। ‘সূর্যোদয়ের দেশে’ প্রায় এক লক্ষ মানুষ বসবাস করেন, যাঁদের বয়স ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সি!

Advertisement

শুক্রবার ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই নিয়ে টানা ৫৫ বছর এই রেকর্ড বজায় রাখল জাপান। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে জাপানে শতায়ু বা তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যা ৯৯,৭৬৩। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা সাড়ে চার হাজার বেশি। যদিও কিছু গবেষণায় এই সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তবে বিশ্বের মধ্যে শতায়ু ও তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যায় জাপান অন্য অনেক দেশের থেকে এগিয়ে, তা স্বীকার করছেন সকলেই। অন্য দিকে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে শতায়ু বা তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। তবে ১৪০ কোটি ভারতের জনসংখ্যার বিচারে, গড় অনেকটাই কম।

জাপানে সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিক হলেন এক মহিলা। তাঁর বয়স ১১৪। নাম শিগেকো কাগাওয়া। কিয়াটোর কাছে নারা অঞ্চলে থাকেন তিনি। পেশায় তিনি চিকিৎসক ছিলেন। ৮০ বছর বয়য়েও গলায় স্টেথোস্কোপ জড়িয়ে, হাতে ডাক্তারের ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন রোগীর বাড়ি বাড়ি। ১১৪ বছর বয়সেও এখনও তিনি দৈনন্দিন প্রায় সব কাজই নিজেই করেন। দৃষ্টিশক্তিও প্রখর। লাগে না চশমা। শরীরে তেমন কোনও বড় ধরনের রোগ বাসা বাঁধেনি। জাপানে সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের নাম কিয়োতাকা মিজুনো। শিগেকোর থেকে তিনি তিন বছরের ছোট।

Advertisement

১০০ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যায় জাপান এখন শীর্ষে হলেও ১৯৬০-এর দশকে তা ছিল না। সে সময় জি৭ গোষ্ঠীর দেশগুলির মধ্যে শতায়ু মানুষের সংখ্যার বিচারে তালিকায় সবচেয়ে নীচে ছিল জাপান। ১৯৬৩ সালে জাপান সরকার শতায়ু বা তার বেশি মানুষদের জরিপ শুরু করে। সেই বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শতায়ু নাগরিকের সংখ্যা ছিল ১৫৩। ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ১৯৮১ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০০ আর ১৯৯৮ সালে ১০,০০০। এখন সেই সংখ্যা এক লাখ ছুঁইছুঁই।

কেন জাপানে শতায়ুর সংখ্যা বাড়ছে? কী রহস্য রয়েছে এর নেপথ্যে? বহু গবেষকেরই গবেষণার বিষয় জাপানের শতায়ুর মানুষের বেঁচে থাকার রহস্য। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উচ্চ আয়ুষ্কালের কারণ মূলত হৃদ্‌রোগ বা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কম হওয়া। জাপানিদের মধ্যে স্থূলতার হারও বিশ্বের অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই কম। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে স্থূলতার হার কম দেখা যায় জাপানে।

জাপানের মানুষের খাদ্যাভ্যাসও বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার অন্যতম কারণ। অন্য দেশে যেখানে খাদ্যতালিকায় চিনি এবং লবণের পরিমাণ বাড়ছে, সেখানে জাপান এই দুই দ্রব্য প্রায় বর্জনই করে ফেলেছে। তবে শুধু খাদ্যাভ্যাস নয়, জাপানিদের বেশি বয়স অবধি বাঁচার নেপথ্যে আরও একটি কারণ হল তাঁদের জীবনধারা। অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত জাপানিরা হাঁটাচলা করেন, ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে গণপরিবহণ ব্যবহারেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement