‘মাউন্ট পায়েকটু’ জয়ের পর কিম জং উন। ছবি: রয়টার্স।
তিনি ৩ বছরে দক্ষ ড্রাইভার হয়েছিলেন। ন’বছরে জিতেছিলেন নৌকো প্রতিযোগিতা। সেই তিনি, অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন এ বার পর্বত জয় করলেন। যে সে পর্বত নয়, উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে উঁচু পর্বত ‘মাউন্ট পায়েকটু’ জয় করেছেন তিনি। অন্তত তেমনই দাবি সে দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যমের। কিমের শৃঙ্গজয়ের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।
তাতে দেখা যাচ্ছে, বরফে ঢাকা পর্বতচুড়োয় স্মিত-হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কিম। প্রবল হাওয়ায় উড়ছে চুল। চোখেমুখে লক্ষ্যজয়ের আনন্দ। পর্বতচুড়োর পিছন থেকে উঁকি মারছে ভোরের সূর্য। ‘সামিট’-এর আদর্শ ছবি। কিম বলেছেন, ‘‘মাউন্ট পায়েকটু চড়তে গিয়ে যে পরিমাণ মানসিক জোর পেয়েছি, তা যে কোনও পরমাণু অস্ত্রকেও হার মানিয়ে দেয়।’’ প্রশাসন জানিয়েছে, শনিবার সকালে কয়েকশো যুদ্ধবিমান চালক, সেনা ও দলের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিকে নিয়ে শৃঙ্গে ওঠেন তিনি।
সমালোচকরা অবশ্য এই জয়কেও খুব সহজে মানতে পারছেন না। আসলে ক’মাস আগেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন কিম। কখনও শোনা গিয়েছিল, স্থূলত্বের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। আবার কখনও কানে এসেছিল, পায়ে গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। কিন্তু জল্পনা পেরিয়ে যেটা সকলের জানা, তা হল কয়েক মাসের জন্য প্রকাশ্যে আসেননি কিম। দীর্ঘদিন পরে যখন আসেন, তখনও লাঠিতে ভর দিয়ে। সমালোচকদের প্রশ্ন, মাত্র কিছু দিন আগেও যাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল, তিনি ২৭৫০ মিটার উঁচু শৃঙ্গ জয় করেন কী ভাবে? এবং এখান থেকেই তৈরি হচ্ছে নতুন সংশয়। তা হলে কি উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ‘শৃঙ্গজয়-কাহিনি’ ছড়াচ্ছে কিম প্রশাসন?
সম্প্রতি স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে আনুগত্য বাড়াতে ‘কিম-মাহাত্ম্য’-এর উপর নয়া পাঠ্যবস্তু চালু করেছে প্রশাসন। তার পরেই পর্বতজয়ের খবর। সন্দেহ তাই সঙ্গত কারণেই জোরদার হচ্ছে।