বধ্যভূমি: সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্যেই ছুটে এল গুলি। রবিবার রক্তাক্ত লাস ভেগাস ভিলেজ। ছবি: এএফপি।
হত্যালীলার পরে পেরিয়ে গিয়েছে একটা দিন। লাস ভেগাস ভিলেজ-এ এখন কঠিন নীরবতা। ইতিউতি ছড়িয়ে ধ্বংসলীলার চিহ্ন। বন্দুকবাজ স্টিফেন প্যাডক (৬৪) সম্পর্কে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। জানা গিয়েছে, তার বাবা জেল পালানো আসামি। তবে ঘাতকের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ এখনও মেলেনি।
রবিবার রাতে ভিলেজে-এ কান্ট্রি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল চলাকালীন প্যাডকের অবিরাম গুলির শিকার হয়েছেন অন্তত ৫৯ জন। জখম আরও ৫২৭ জন। লাস ভেগাসে এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পরে মার্কিন কংগ্রেসের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদস্যরা আমেরিকায় বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন পরিবর্তনের জন্য সরব হয়েছেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে এফবিআই।
৪৪ তলা ম্যান্ডেলে বে হোটেলের ৩৩ তলার একটি ঘর থেকে অনুষ্ঠানের ভিড়ে গুলিবৃষ্টি করেছিল প্যাডক। সেই ঘর থেকে পুলিশ হ্যান্ডগান-সহ মোট ২৩টি অস্ত্র পেয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েক পাউন্ড অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটও উদ্ধার হয়েছে যা বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। প্যাডকের শেষ বাসস্থান নেভাডার মেসকিটের বাড়িটিতেও হানা দেয় পুলিশ। সেখানে ১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, হাজার হাজার রাউন্ড গুলি এবং বৈদ্যুতিন সরঞ্জামও মিলেছে। এত সব অস্ত্রের বহর ভাঁজ ফেলছে পুলিশের কপালে। কিন্তু অবাধ এই হত্যালীলার কোনও ব্যাখ্যা এখনও তাদের কাছে নেই।
কারণ অবসরপ্রাপ্ত অ্যাকাউন্ট্যান্ট প্যাডকের বিরুদ্ধে অতীতে অপরাধের রেকর্ড নেই। বিবাহবিচ্ছিন্ন লোকটি সন্তানহীন। কিন্তু সে এমন অস্ত্র ভাণ্ডার কেন তৈরি করেছিল, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। অতীতে সে যত অস্ত্র কিনেছে, সবই বৈধ পথে কেনা হয় বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। হামলার ধরন দেখে পুলিশ নিশ্চিত, প্যাডক তার অস্ত্র ভাণ্ডারের একটি রাইফেলকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে পরিণত করেছিল।
রবিবার রাতে যা হয়েছে, প্যাডক একাই তার পিছনে ছিল বলে এখনও ধারণা পুলিশের। হোটেলের ঘর থেকে তার দেহ উদ্ধার হওয়ার আগে সামান্য সময়ের জন্য প্যাডককে জীবন্ত অবস্থায় দেখেছিলেন পুলিশের কিছু অফিসার। তাদের দাবি, ওই হোটেল থেকে গুলি ছুটে আসছে জানার পরে পুলিশ প্রথমে ম্যান্ডেলে বে-র প্রতিটি তলায় আততায়ীর জন্য তল্লাশি চালায়। যখন স্পেশ্যাল ওয়েপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস দলের (এসডব্লিউএটি) ছয় অফিসার প্যাডকের সুইটে ঢোকেন, তাঁদের দিকেও ধেয়ে আসে গুলি। ভিতরের ঘরের দরজা ভেদ করে এক রক্ষীর পায়ে গুলি এসে লাগে। দরজা ভেঙে পুলিশ যখন ঘরে ঢোকে, তখন প্যাডক আর বেঁচে নেই।