ছবি: সংগৃহীত।
ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনা বাহিনী ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে।
ইজ়রায়েল ও ইরানের সংঘাতের মধ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন। তিনি তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমা মোহাজেরানি বলেন, “ইরানের সঙ্গে ইজ়রায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে, আলোচনা অর্থহীন হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইজ়রায়েলকে তার আক্রমণ বন্ধ করতে হবে যাতে ইরান আমেরিকার সঙ্গে আরও আলোচনার চিন্তা ভাবনা করতে পারে।”
ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা শনিবার ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
ইজ়রায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক ইজ়রায়েল থেকে আমেরিকার নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে। তার জন্য চালু হয়েছে বিশেষ বিমান।
ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রী গিডিয়ন সা’রের দাবি, ইরানের উপর হামলা তাঁদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ অন্তত ২ থেকে ৩ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।
মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানগুলি মিসৌরির ওসাইটম্যান বিমান ঘাঁটি থেকে রওনা দিয়েছে। ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল কমুউনিকেশনস’ দেখাচ্ছে এই বি২ বিমানগুলি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেগুলির গন্তব্য কোথায় তা এখনও স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে সেগুলি গুয়ামে আমেরিকার বায়ুসেনা ঘাঁটিতেই যাচ্ছে।
যদিও, এই বোমারু বিমানগুলির স্থানান্তরের অর্থ এটা নয় যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের হামলার সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। আর সামরিক বিশেষজ্ঞদের মত, এই ধরনের যুদ্ধবিমান এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা স্থানান্তর মোটেই অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তবে, এমনটা হতেই পারে যে আমেরিকা সুকৌশলে এই বিমানগুলিকে এই সময়ে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিল, যাতে ইরানের উপর খানিক চাপ সৃষ্টি করা যায়।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, আমেরিকা থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে বেশ কেয়েকটি ‘বি-২’ বোমারু বিমান যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ওই বোমারু বিমান ১৩ হাজার কেজির ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা বহন করতে সক্ষম। সেই বোমা দিয়েই ইরানের ফোরডো ভূর্গভস্থ পরমাণু কেন্দ্রটি ধ্বংস করা যেতে পারে বলে মনে করেছেন অনেকে।
ছবি: এক্স।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যায় ওয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা দলের বৈঠক ছিল। ইরানের পরমাণবিক কেন্দ্রে ইজ়রায়েলের আক্রমণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে।
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে এখনও পর্যন্ত সরাসরি যোগ দেয়নি আমেরিকা। তবে অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকা এই যুদ্ধে যোগ দিতে পারে, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। তবে আমেরিকা যদি ইরানের উপর হামলা চালায়, তবে চুপ থাকবে না ইরান, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছে ইরান। এ বার ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি জানিয়ে দিল, আমেরিকা যদি ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে যোগ দেয়, তবে তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে হামলা চালাবে! শনিবার হুথির মুখপাত্র আমেরিকা এই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন।