প্রহরী: এই এলাকা থেকেই ধরা পড়েছে ৬ সন্দেহভাজন। ছবি: রয়টার্স।
এক দিনে ভেস্তে দেওয়া হল দু-দু’টো হামলার ছক। জঙ্গি-দমন অভিযানে বড় সাফল্য পেল স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কাল সন্ধ্যায় ইংল্যান্ডের দু’জায়গায় সশস্ত্র তল্লাশি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ছ’জনকে। এদের মধ্যে এক জন তরুণীকে গুলিও করা হয়েছে। তার অবস্থা সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কাল দুপুরেই পার্লামেন্ট স্কোয়ারে ধরা পড়ে আর এক সন্দেহভাজন। নাম খালিদ ওমর আলি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হামলা চালানোই তার উদ্দেশ্য ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দ্বিতীয় সাফল্য আসে সন্ধেয়। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নীল বসু জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে খবর ছিল শহরে ফের বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর পাওয়া মাত্র সময় নষ্ট করেনি পুলিশ। প্রথমে সন্ধে সাতটা নাগাদ উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের উইলেসডেনের হার্লেসডেন রোডের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় লন্ডন পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। বেশ কয়েক বার গুলিও চালাতে হয়েছে পুলিশকে। ছুড়তে হয়েছে কাঁদানে গ্যাস।
আরও পড়ুন:গুলির আওয়াজে চমকে উঠেছিলাম
প্রথমে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। ধৃতদের মধ্যে বছর ষোলোর এক নাবালক রয়েছে। বাকি এক তরুণ ও তরুণীর বয়স কুড়ির কোঠায়। কিছু ক্ষণ পরে ওই বাড়িতেই ফেরত আসে আরও দুই সন্দেহভাজন তরুণ-তরুণী। তাদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনেরই বয়স ২৮। অন্য আর এক অভিযানে কেন্টের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ৪৩ বছরের এক মহিলাকে। ধৃত ছ’জন একই হামলার পরিকল্পনায় লিপ্ত বলে জানিয়েছেন নীল।
তবে সন্ধ্যার ওই অভিযানের সঙ্গে ওমর আলির গ্রেফতারের ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই বলেই আপাতত জানিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই পুলিশ কর্তা। যে তরুণী আহত, তাকে সরকারি ভাবে এখনই গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রাখা হয়েছে তাকে। কোনও অভিযানে গুলি চালানোর ঘটনা লন্ডন পুলিশের ইতিহাসে বিরল। বিষয়টি নিয়ে তাই সংবাদমাধ্যমে শোরগোল শুরু হয়েছে।
গত মাসের ২২ তারিখ লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতুতে হামলা চালিয়েছিল খালিদ মাসুদ নামে এক জঙ্গি। তার হামলায় মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। তার পর থেকেই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে ইংল্যান্ড জুড়ে। কাল জোড়া হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে আপাতত তাই একটু স্বস্তিতে লন্ডন পুলিশ। নীল বলেছেন, ‘‘নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অফিসাররা অনবরত লড়াই করে যাচ্ছেন। কখনও সশস্ত্র, কখনও নিরস্ত্র। কিছু ঘটনা সাধারণ মানুষ দেখতে পান। কিন্তু তাঁদের চোখের বাইরেও অনেক কিছু হয়, যা কোনও দিন প্রকাশ্যে আসবে না।’’