নাইজেরিয়ার মেয়েদের পাশে মালালা

নোবেলবিজয়িনী বললেন, তাঁর নাইজিরিয়া সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ২০১৪ সালেও এ দেশে এসেছিলেন তিনি। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গুডলাক জোনাথনের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, চিবকের অপহৃতা স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের যেন উদ্ধার করা হয়। সোমবার তিনি দেখা করলেন উদ্ধার হওয়া মেয়েদের সঙ্গে। সংখ্যা শতাধিক। তাঁরা এখন রাজধানী আবুজার সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকেন। মালালা তাঁদের মুক্তির আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মাইদুগুরি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

কথা: মালালার সঙ্গে সেই মেয়েরা। ছবি: এপি।

উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার তরুণীরা সোল্লাসে অভ্যর্থনা জানালেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়িনী মালালা ইউসুফজাইকে। সেখানে মালালা বোকো হারামের হাতে যে সব মেয়ে অপহৃতা হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখলেন। ২০ বছর বয়সি এই পাকিস্তানি সমাজকর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, বিশ্বের মানবতা যখন চরম বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়ে, তখনও এই মেয়েগুলি দমে যাননি। এই সাহস দেখে মালালা নিজেই খুব উদ্দীপনা পেয়েছেন। তিনি এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরছেন। তাঁর উদ্দেশ্য নারীশক্তিকে আরও মজবুত করে তোলা।

Advertisement

বছর তিনেক আগে চিবকের যে স্কুলছাত্রীদের গণঅপহরণ করেছিল বোকো হারাম গোষ্ঠী, তাঁদের অনেকেই ছাড়া পেয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখাও করেছেন মালালা। বলেছেন, ‘‘এখানে এসেছি নাইজিরিয়ার মেয়েদের জন্য। তাঁদের জন্য লড়তে, তাঁদের হয়ে কথা বলতে এসেছি।’’ মাইদুগুরি শহরের ভিতরে ছড়িয়ছিটিয়ে থাকা বহু শিবির ঘুরে দেখেছেন মালালা। বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠীর সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই জঙ্গি গোষ্ঠী এখনও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময়ই তারা অল্পবয়সি মেয়েদের আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে ব্যবহার করছে।

‘‘সন্ত্রাসের রাজত্বে বাস করছেন এঁরা।’’ মেয়েদের বিষয়ে বললেন মালালা। এঁদের অনেকেই পরিবারের মানুষদের খুন হতে দেখেছেন। ২০১২ সালে, মাত্র ১৫ বছর বয়সে তালিবান সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে মাথা এ ফোঁড়-ও ফোঁড় হয়ে গিয়েছিল মালালার। নারীশিক্ষা নিয়ে মুখ খোলায় ওই শাস্তি পান তিনি। বহু কষ্টে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন মালালা। তার পরও লড়াই ছাড়েননি।

Advertisement

নোবেলবিজয়িনী বললেন, তাঁর নাইজিরিয়া সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ২০১৪ সালেও এ দেশে এসেছিলেন তিনি। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গুডলাক জোনাথনের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, চিবকের অপহৃতা স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের যেন উদ্ধার করা হয়। সোমবার তিনি দেখা করলেন উদ্ধার হওয়া মেয়েদের সঙ্গে। সংখ্যা শতাধিক। তাঁরা এখন রাজধানী আবুজার সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকেন। মালালা তাঁদের মুক্তির আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন। কিন্তু খুশি হতে পারেননি। কারণ ওই মেয়েরা পরিবারের কাছে এখনও যেতে পারেননি। মালালার আশা, শিগগির তাঁরা পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিক জীবন যাপন করবেন। তিনি বলেছেন, আরও অনেকে এখনও বোকো হারাম গোষ্ঠীর কবলে রয়েছেন। সরকারের উচিত, তাঁদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।

বোকো হারাম গোষ্ঠীকেও এক হাত নিয়েছেন মালালা। বলেছেন, ইসলাম মোটেও এমন দুষ্কর্মকে মান্যতা দেয় না। এ সব মানবতার বিরুদ্ধে, অতএব ইসলামেরও বিরুদ্ধে। বোকো হারামের অত্যাচারে এক কোটিরও বেশি শিশু ঘরছাড়া। সোমবার মালালা অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ইয়েমি ওসিনবাজো-র সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলেন। শিক্ষা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণার আর্জিও জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন