ইস্তফা দেবেন না মালিকি, নতুন প্রধানমন্ত্রী ইরাকে

জঙ্গি-দমনে এখনও সাফল্য আসেনি। এর মাঝেই ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডেপুটি স্পিকার হায়দর আল-ইবাদির নাম ঘোষণা করলেন দেশের প্রেসিডেন্ট ফউআদ মাসাওম। ক’দিন থেকেই দাবি উঠছিল, তদারকি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিন ‘পক্ষপাতগ্রস্ত’ নুরি অল-মালিকি। কিন্তু ক্ষুব্ধ মালিকি গত রাতেই জানিয়ে দেন, পদত্যাগের প্রশ্ন নেই। বরং সংবিধান ভাঙার দায়ে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই কোর্টে যাবেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বাগদাদ শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১১
Share:

ত্রাণের খাবার ও জলের বোতল আঁকড়ে এক ইরাকি খুদে। ছবি: এএফপি

জঙ্গি-দমনে এখনও সাফল্য আসেনি। এর মাঝেই ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডেপুটি স্পিকার হায়দর আল-ইবাদির নাম ঘোষণা করলেন দেশের প্রেসিডেন্ট ফউআদ মাসাওম। ক’দিন থেকেই দাবি উঠছিল, তদারকি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিন ‘পক্ষপাতগ্রস্ত’ নুরি অল-মালিকি। কিন্তু ক্ষুব্ধ মালিকি গত রাতেই জানিয়ে দেন, পদত্যাগের প্রশ্ন নেই। বরং সংবিধান ভাঙার দায়ে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই কোর্টে যাবেন তিনি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী বদলালেও অবশ্য দেশের পরিস্থিতিতে বদল আসবে এমন কথা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ দিনও উত্তর ইরাকের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে ইসলামিক স্টেট(আইএস) জঙ্গিরা। জবাবে আকাশপথে এসেছে মার্কিন যুদ্ধবিমানের আক্রমণ ও ড্রোন হানা। পাশাপাশি শিনজার পাহাড়ে আটকে থাকা ইয়েজিদিদের জন্য চতুর্থ দফার ত্রাণও পাঠিয়েছে আমেরিকা। তবে আশার খবরও রয়েছে। প্রথমত, আকাশপথে বেশ কিছু ইয়েজিদিকে উদ্ধার করেছে কুর্দ বাহিনী। পাশাপাশি মার্কিন-হানার সাহায্য নিয়ে এ দিন দু’টি শহরও জঙ্গি-কবলমুক্ত করতে পেরেছে তারা। মার্কিন প্রশাসন তাই জানিয়েছে, সোমবার থেকে কুর্দ বাহিনীকেও অস্ত্র বিক্রি করবে তারা। কিন্তু ঠিক কী ধরনের অস্ত্র পাঠানো হবে, কোন সংস্থা তা পাঠাবে, তা নিয়ে কিছু জানায়নি মার্কিন প্রশাসন।

তবে যুদ্ধ যে ইরাকের সমস্যার সমাধান নয়, তা মনে করিয়ে দিয়ে এ দিন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরিও জানান, অবিলম্বে নয়া সরকার গঠন করা দরকার ইরাকে। আমেরিকা তাতে পুরোপুরি ভাবে সমর্থন করবে। তাঁর বয়ানে, “স্থায়ী সরকার তৈরির প্রক্রিয়া আশা করি বাধা দেবেন না মালিকি।”

Advertisement

তথ্য বলছে, সুন্নি, ইয়েজিদি এমনকী তাঁর নিজের শিয়া সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও পদত্যাগের অনুরোধ পেয়েছিলেন মালিকি। কিন্তু কান দেননি। তাঁর দাবি, এপ্রিলের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল তাঁর দল। অথচ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী পদে কাউকে নিয়োগ করেননি প্রেসিডেন্ট। তাই মালিকিই তদারকি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালাচ্ছিলেন। এ পরিস্থিতিতে তিনি সেটি যদি ছেড়ে দেন, তা হলে দেশের হাল আরও খারাপ হবে। গত রাতে আচমকাই এক বক্তৃতায় তিনি হুমকি দেন, এ বার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই কোর্টে যাবেন তিনি। গোটা বিষয়ে জটিলতা বাড়িয়েছে আদালতই। কারণ সম্প্রতি এক রায়ে ইরাকের আদালত জানায়, মালিকির দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। যদিও সেটা ঠিক কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু কোর্টের রায়ের সুযোগ নিয়ে গত রাতে গলা চড়ান মালিকি। তার দেড় ঘণ্টা পর থেকেই সেনা তৎপরতা বেড়েছে রাজধানী বাগদাদে। অনেকের ধারণা, নিজের পদ বাঁচাতে হয়তো জঙ্গি-হানার মাঝেই অনুগত সেনাদের দিয়ে অভ্যুত্থান ঘটানোর পরিকল্পনা করছেন মালিকি।

সত্যিটা যাই হোক। সোমবার আমেরিকার সমর্থনপুষ্ট প্রেসিডেন্ট টিভিতে যতটা দৃঢ়তার সঙ্গে তিরিশ দিনের মধ্যে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন আল-ইবাদিকে, তার পর মালিকির চাপ বাড়ল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এখন তিনি কী করেন, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন