গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি হলেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিত করবে না ইরান। পশ্চিম এশিয়ার দেশ ওমানের মধ্যস্থতায় ইটালির রাজধানী রোমে পঞ্চম দফার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে সোমবার এই বার্তা দিয়েছে তেহরান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েসকিয়ান সোমবার বলেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সপ্তাহান্তের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে।’’ তবে সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা যদি কোনও চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তা হলেও ইরান টিকে থাকতে পারবে।’’
ইরান প্রয়োজনে চুক্তি না করেই আলোচনার টেবিল থেকে উঠে আসতে প্রস্তুত বলে জানিয়ে সোমবার মাসুদ বলেন, ‘‘যদি তারা (আমেরিকা) আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বা নিষেধাজ্ঞা জারি কপে দেয়, তা হলে এমন নয় যে আমরা না খেয়ে মারা যাব। আমরা টিকে থাকার পথ খুঁজে নেব।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা বন্ধ রাখলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়েছিল।
কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানান, এই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ২০১৮ সালে তাঁর নির্দেশে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা। কিন্তু ২০২৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ একটি রিপোর্টে জানায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া। কিন্তু পাঁচ দফা আলোচনার পরেও ট্রাম্পের শর্ত মেনে পরমাণু চুক্তি করতে রাজি হয়নি ইরান।