দুঃসাহসী ও দুর্ধর্ষ অভিযাত্রী বলতে যার নাম একেবারে প্রথমের দিকেই আসে তিনি বেয়ার গ্রিলস। বেসরকারি চ্যানেলের অন্যতম জনপ্রিয় শো-র সঞ্চালক, যিনি অনায়াসে একটি পোকার পেট থেকে নাড়িভুড়িসমেত প্রোটিন ভেবে খেয়ে ফেলতে পারেন। তাঁর জীবনে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি কে জানেন?
বেয়ারের স্ত্রী শারা গ্রিলস বেয়ারের অন্যতম প্রিয় মানুষ। অভিযান থেকে বাড়ি ফিরতে চান বার বার যাঁর জন্য, তিনি শারা, এমনটাই বলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী।
১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডে জন্ম হয় শারার। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী শারা ভালবাসতেন লেখালেখি করতে।
বেয়ারের সঙ্গে আলাপ হল যখন, দু’জনেই তখন স্কটল্যান্ডে ছিলেন কাজের সূত্রে। ক’দিন পরই বেয়ার চলে গেলেন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে।
এভারেস্ট জয় করে এসেই বেয়ার সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন শারাকে। বিয়ে হলেও বেয়ারের কাজের জন্য প্রায়ই বাইরে যেতে হত। এক অর্থে গত ১৯ বছর লং ডিস্ট্যান্স সংসার করছেন তাঁরা।
বিয়ে যাতে কোনও ভাবেই না ভাঙে, প্রথম থেকেই ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে কথা বলে নিয়েছিলেন দু’জনে। বিয়ের পর গিয়েছিলেন মনোবিদের কাছেও। কারণ পরস্পরকে কিছুতেই হারাতে চাননি তাঁরা। সারার প্রথম উপন্যাসও ‘ম্যারেজ ম্যাটার্স’। ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় সেই বই।
এর পর ২০১২ সাল। ‘নেভার স্টপ হোল্ডিং হ্যান্ডস: অ্যান্ড আদার ম্যারেজ সারভাইভাল টিপস’ নামের একটি প্রবন্ধের বই লেখেন সারা। যেহেতু তাঁদের প্রেমের বেশির ভাগটা দূরে দূরেই কাটে, তাই ভুল বোঝাবুঝিতে বেয়ারকে কোনও মতেই হারাতে চান না তিনি, বলেন এমনটাই।
শারা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গেও যুক্ত। স্ত্রী সম্পর্কে বেয়ার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছিলেন, অত্যন্ত দয়ালু তিনি। এত ভাল মনের মানুষ পাওয়া মুশকিল।
শারা বলেন, বেয়ার অত্যন্ত সাহসী। চিন্তা যে হয় না, তা নয়। কিন্তু তাঁর সমর্থন সব সময়েই পেয়েছেন বেয়ার। তাঁর মত, পরিবারকে হৃদয়ে রাখেন বলেই কঠিনতম অভিযান সহজ হয়ে গিয়েছে তাঁদের কাছে।
শারা ও বেয়ারের তিন ছেলে রয়েছে। ২০০৩ সালে জন্মায় প্রথম সন্তান জেসস, এর পর ২০০৬ ও ২০০৯ সালে মার্মাদুকে মিকে পার্সি ও হাকলবেরি এডওয়ার্ড জকলিনের জন্ম।
মূলত লন্ডনেরই বাসিন্দা তাঁরা, তবে সেন্ট টুডওয়াল আইল্যান্ডের বাড়িতেও থাকেন দু’জনে। বাড়িতে রয়েছে পোষ্যও।
প্রকৃত অর্থে সর্বভুক বলা যেতে পারে বেয়ার গ্রিলসকে। পতঙ্গভুকও বটে। মনে হতে পারে, বেশ নিষ্ঠুরই হয়ত বা। কিন্তু শারা বলছেন, বেয়ার খুবই রোম্যান্টিক, সোশ্যাল মিডিয়াতেও স্ত্রীকে অ্যাঞ্জেল বলে উল্লেখ করেন বেয়ার। শারা তখন বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।