সীমান্ত-শিবিরে হঠাৎ হাজির মেলানিয়া ট্রাম্প

প্রশ্ন উঠেছে, এই নীতি প্রয়োগের ফলে যে ২৩০০ শরণার্থী শিশু ইতিমধ্যেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, তাদের কী হবে? ফেডারেল অফিসাররা প্রাথমিক ভাবে বলছেন, ট্রাম্পের নির্দেশে সইয়ের ফলে ওই সব শিশু এখনই পরিবারের কাছে পৌঁছে যাবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। অভিবাসন নিয়ে তদন্ত চলায় তাদের বাবা-মা ফেডারেল হেফাজতেই থাকবেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০২:৪৯
Share:

পাশে: টেক্সাসে মেলানিয়া। ছবি: এএফপি।

শরণার্থী শিশুদের সঙ্কট মেটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার প্রশাসনিক নির্দেশে সই করার কয়েক ঘণ্টা পরেই মেক্সিকো সীমান্তে এক অভিবাসী আটক কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। টেক্সাসের ম্যাকালেনের এই কেন্দ্রে কয়েক ঘণ্টা ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন মার্কিন স্বাস্থ্যসচিব অ্যালেক্স আজ়ার। অভিবাসী আটক কেন্দ্রের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ফার্স্ট লেডি প্রশ্ন ছুড়ে দেন— ‘‘এই সব বাচ্চাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে আমি কী করতে পারি?’’

Advertisement

ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে নিজের অবস্থান থেকে সরতে বাধ্য হয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ওভাল অফিসে নির্দেশে সই করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘অভিবাসী শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে দেখে আমার স্ত্রী মেলানিয়া খুবই ভেঙে পড়েছেন। এ ভাবে বাচ্চাদের আলাদা করার বিরোধিতা করেছে আমার মেয়ে ইভাঙ্কাও। আমিও এ ভাবে বাচ্চাদের বিচ্ছিন্ন করার বিরোধী।’’

নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং বারবার মত বদলানো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে নতুন কিছু নয়। সমালোচকেরা বলছেন, তাঁর জ়িরো টলারেন্স নীতির জন্যই পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে প্রায় আড়াই হাজার শিশু। যদিও প্রেসিডেন্টের দাবি, আগের জমানায় ডেমোক্র্যাটদের ভ্রান্ত নীতির জন্যই ভুগতে হচ্ছে অভিবাসীদের।

Advertisement

কিছুটা সুর নরম করলেও স্বকীয় ভঙ্গিতে ট্রাম্প অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি পিছু হটেছি, ভাবার কোনও কারণ নেই! সীমান্ত কঠিন হবেই। খুব কঠিন। কিন্তু পরিবার বিচ্ছিন্ন থাকবে না। বিচ্ছিন্ন পরিবারের ছবি দেখে আমার ভাল লাগেনি।’’

বাবা-মায়ের থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করা হবে না— এই নির্দেশ দিলেও অবশ্য আইনি চ্যালেঞ্জ এড়াতে পারছেন না ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসন অবৈধ অভিবাসী পরিবারকে ২০ দিনের বেশি হেফাজতে রাখতে চাইলেও ফেডারেল বিচারক তাতে সায় না-ই দিতে পারেন। কারণ ১৯৯৭-এর এক আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে (বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও) শিশুদের ২০ দিনের বেশি আটকে রাখা যাবে না।

প্রশ্ন উঠেছে, এই নীতি প্রয়োগের ফলে যে ২৩০০ শরণার্থী শিশু ইতিমধ্যেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, তাদের কী হবে? ফেডারেল অফিসাররা প্রাথমিক ভাবে বলছেন, ট্রাম্পের নির্দেশে সইয়ের ফলে ওই সব শিশু এখনই পরিবারের কাছে পৌঁছে যাবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। অভিবাসন নিয়ে তদন্ত চলায় তাদের বাবা-মা ফেডারেল হেফাজতেই থাকবেন।

প্রেসিডেন্টের চার পাতা নির্দেশ অনুযায়ী, এখনও যাঁরা অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আটক করা হলেও এমন জায়গায় সেই সব পরিবারকে রাখার ব্যবস্থা করা হবে যাতে শিশুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে। কিন্তু সেই জায়গা ঠিক কোথায়, তা নিয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই প্রশাসনিক নির্দেশে। তাই যত দিন সেই জায়গা ঠিক করা হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত শিশুরা ফের আলাদা থাকবে কি না, সে সম্পর্কেও কোনও তথ্য দেননি প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের অফিসাররাও এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন