Forrest Fenn

পাহাড়ে রাশি রাশি সোনা-হিরে লুকিয়ে সঙ্কেত জানালেন এই বৃদ্ধ

ম্যাপেও আঙুল দিয়ে জায়গাটা দেখিয়ে দিয়েছেন, তাও কেউ খুঁজে পাচ্ছে না।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১০:০০
Share:
০১ ২১

উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতমালায় আছে সত্যিকারের গুপ্তধন। এক ব্যক্তি খেয়ালের বশে সেখানে পুঁতে রেখেছেন স্বর্ণ মুদ্রা ও মূল্যবান জিনিস ভর্তি সিন্দুকও। বছর সাতাশির এই ব্যক্তির নাম ফরেস্ট ফেন। ভিয়েতনামের যুদ্ধে বিমানচালক ছিলেন ইনি। তাঁর লুকনো গুপ্তধনের খোঁজে আপনিও কি ঘাম ঝরাবেন নাকি?

০২ ২১

নিউ মেক্সিকোর সান্তা ফে ও কানাডার সীমান্তের কাছে হাজার মাইল দূরত্বের মধ্যেই রকি পর্বতমালায় রয়েছে এই গুপ্তধন। ২০১০ সালে এখানেই গু্প্তধন রেখেছেন, এমনটাই দাবি আর্ট ডিলার ফেনের।

Advertisement
০৩ ২১

নিউ মেক্সিকোর শিল্পকলা ও স্বর্ণমুদ্রা সংগ্রাহক ফরেস্ট ফেন সব কিছুতেই যেন রহস্য ভালবাসেন। তাই নিজের ধন সম্পদ লুকিয়ে রেখে আনন্দ পেতে চেয়েছেন। তবে তাঁর মূল বক্তব্য, ৮০ বছর বয়সে যখন তিনি ওই পাহাড়ে গিয়ে গুপ্তধন লুকিয়ে রাখতে পেরেছেন, তখন তা খুঁজে বের করা খুব একটা কঠিন কাজ কি?

০৪ ২১

ফেন জানিয়েছেন, মোটামুটি সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষ এই গু্প্তধনের সন্ধানে ঘুরছেন। মুচকি হেসে সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘এমনও হতে পারে কালকেই পাওয়া গেল গুপ্তধন, আবার হাজার বছর ধরে লোক খুঁজেই গেল গুপ্তধন কোথায় আছে?’’

০৫ ২১

২০১৬ সালে ফেন জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী শুধু জানেন রকি পর্বতের কোন দিকে রয়েছে এই গুপ্তধন। তিনি মারা গেলে তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই গু্প্তধনও প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাবে।

০৬ ২১

ফেন নিজের ইনস্টাগ্রামে দিব্যি শেয়ার করেছেন গু্প্তধনের ক্লু। ‘নট ফার বাট, টু ফার টু ওয়াক, পুট ইন বিলো দ্য হোম অফ ব্রাউন’, এরকমই বেশ কিছু লাইন রয়েছে তাতে। ইনস্টাগ্রামে ফেনের ফলোয়ার কয়েক লক্ষ ছাড়িয়েছে। কিন্তু গু্প্তধন খুঁজে কেউ পাননি।

০৭ ২১

ফেনের উপর লোকজন রীতিমতো রেগেই যাচ্ছেন, কারণ তিনি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন, সিন্দুকে তিনি কী কী লুকিয়ে রেখেছেন। সোনার বল, ৩০০ বছরের পুরনো সোনা ও রুপোর বাক্স। কিন্তু কেউই যে খুঁজে পাচ্ছেন না।

০৮ ২১

এছাড়াও রয়েছে প্রাচীন আমলের সোনার আয়না, যা পাঁচ ইঞ্চি পুরু তো হবেই। এছাড়াও নাকি রয়েছে দামি দামি গয়না, অ্যান্টিক গোল্ডের তৈরি ড্রাগন ব্রেসলেট, হিরে, পান্না, চুনী, স্যাফায়ার স্টোন, ছ’টা এমারেল্ড। এগুলোর ছবি দেননি যদিও।

০৯ ২১

তাঁর ২৪ লাইনের কবিতা ‘দ্য থ্রিল অব দ্য চেজ’ ঘিরেই রহস্য বাড়ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাঁর বাড়িতেও সন্ধান চালিয়েছে। কিন্তু কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি এই প্রত্নতত্ত্ববিশারদের নামে। উল্টে তিনি নিজের ঘুরে বেরানোর ছবি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

১০ ২১

ফেনের এই গুপ্তধনের মূল্য আনুমানিক কয়েক’শ কোটি টাকা। ৪০ পাউন্ডের একটা বাক্স ভর্তি করে রেখেছেন এই গু্প্তধন। ১৯৮৮ সালে যখন তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ল, তখন তিনি ভেবেছিলেন বাক্স ভর্তি গুপ্তধনের মাঝেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হবে। কিন্তু তিনি ক্যানসারের মতো মারণ রোগ জয় করে আবারও রহস্য গড়ে তোলার উৎসাহ ফিরে পান।

১১ ২১

নিজের বাড়িতেও প্রত্নতত্বের সংগ্রহশালা রয়েছে ফেনের। একটা সময় মদ আর অসংখ্য ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্যান্সার জয় করে নতুন উদ্যমে নিজের বিপুল ধন সম্পদ লুকিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকেন তিনি।

১২ ২১

ফেন বারবার বলছেন, ভাল ভাবে মানচিত্রটা লক্ষ্য করতে। সেখানেই রয়েছে ‘ক্লু’। তিনি বলেছেন, কেউ যদি এই রত্নভাণ্ডার খুঁজে না পায়, তবুও ব্রোঞ্জের এই সিন্দুক শতাব্দী ধরে তার ধনসম্পদকে রক্ষা করবে। অনেকেই তাঁর গু্প্তধন খোঁজার জন্য চাকরি ছেড়েছেন। চার জন মারাও গিয়েছেন গু্প্তধনের সন্ধান করতে গিয়ে, বলছে সংবাদ সংস্থা।

১৩ ২১

প্রত্যেক দিন অসংখ্য ফোন আর অজস্র ই মেল আসে ফেনের কাছে। দৈনিক ১০০টা ই মেল তো বটেই। তবে তাঁর দাবি, মানুষ বড্ড বেশি ঘরকুনো। তাঁদের রোমাঞ্চকর অভিযানের স্বাদ পাওয়া উচিত। তাই এরকম ভাবনা ফেনের। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে ক্যাম্প করতে যাচ্ছে প্রকৃতির মাঝে, এটা তো আনন্দের ব্যাপার। আর সঙ্গে পেয়ে যেতে পারে গুপ্তধন।

১৪ ২১

বিভিন্ন পেশার হাজার হাজার মানুষ ফেনের গুপ্তধনের সন্ধানে নিউ মেক্সিকো, কলোরাডো, উয়োমিং এবং মন্টানায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বছরের পর বছর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ হাজার ফুট উপরে রয়েছে এই গুপ্তধন।

১৫ ২১

ফেন আশি’র দশকে সাতশ বছর আগের তানো উপজাতিদের প্রাগৈতিহাসিক স্থান, স্যান ল্যাজারো পাবলো কিনে নেন। তাঁর জীবনের বাকি সময় এখানেই কাটিয়ে দেন। তিনি বরাবর একটু খেয়ালি প্রকৃতির। চার জনের মানুষের মৃত্যু আদৌ তাঁর গুপ্তধন খুঁজতে গিয়ে কি না, জানা নেই। এই ট্রেজার হান্ট তাই বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল।

১৬ ২১

কবিতা থেকে বোঝা যায় যে, ফেন কোনও জলাশয়ের আশেপাশে তার ধনভাণ্ডার লুকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু রকি পর্বতমালার জলাশয়গুলোতে যাওয়ার রাস্তা সময় বিশেষে পরিবর্তিত হয়। তাই ঘনিয়েছে আরও রহস্য।

১৭ ২১

মুরগির ডিমের আকারের কয়েক হাজার সোনার টুকরো, চুনী, এমারেল্ড, নীলকান্তমণি ও হিরের গয়না, সবই যেন রূপকথার গল্পের মতো। তিনশ বছরের পুরনো দুই হাজারেরও বেশি ঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল যেখানে এক সময় রকি পর্বত মালার পাশে। সেখানেই কি পুঁতে রেখেছেন তিনি এই সব?

১৮ ২১

যে সবার আগে ধন-সম্পদে ভর্তি ওই বাক্স খুঁজে পাবে, সব কিছুই তাঁর হয়ে যাবে। আর এতে ফেনের লাভ? কিছুই না, শুধু মনে একটুখানি শান্তি! এমনটাই বলেছেন তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

১৯ ২১

ফেনের একটি বই রয়েছে গুপ্তধনের ‘ক্লু’ নিয়ে। গুপ্তধন খোঁজার ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বইয়ে ছাপানো কবিতার মধ্যে ৯টি ক্লু-র অর্থ খুঁজে বের করতে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সেই ২০১৫ সাল থেকে।গুপ্তধন পেতে হলে সবাইকে তাঁর দেওয়া 'ক্লু' অনুসরণ করেই এগোতে হবে। তা না হলে গুপ্তধন পাওয়ার আশা নেই।

২০ ২১

ফেনের এমন পাগলামির পিছনে অনেকের যে সন্দেহ জাগেনি, তা কিন্তু নয়। অনেকেই মনে করেন, এমন গুপ্তধন লুকিয়ে রাখার গল্প স্রেফ ভাঁওতাবাজি। তিনি নাকি আসলে বাক্সে কিছুই রাখেননি।

২১ ২১

ফেনের কাছে এমনও ফোন এসেছে, যেখানে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেছেন, তাঁকে মেরে ফেললে কোনওদিনই পাওয়া যাবে না গু্প্তধন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement