মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত।
২০২৪ সালের জুলাই-অগস্ট মাসের ‘ছাত্র-গণ অভ্যুত্থান’ উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাবে। ক্ষমতা বদলের বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার এই প্রতিশ্রুতি দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ শীর্ষক কর্মসূচিতে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করে তিনি বলেন, ‘‘পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।’’
গত বছরের জুলাইয়ের গোড়ায় শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং তার পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়েছিল। বাংলাদেশ বায়ুসেনার বিমানে ঢাকা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতার পালাবদলের সেই বর্ষপূর্তিতে ইউনূস যে ২৮ দফার জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তা আদতে জুলাই-অগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের একটি দলিল। যার মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ইউনূসের দাবি। হাসিনার ১৬ বছরের শাসনকে ‘‘ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী শাসনব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে এবং একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অতি উগ্র বাসনা’’ বলে চিহ্নিত করেছেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শোষণের পাশাপাশি জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২৩ বছর পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের অত্যাচারের কথা। নিহত রাষ্ট্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানের জমানায় গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল বলেও ঘোষণাপত্রে অভিযোগ করেছেন ইউনূস। আশির দশকের ‘সামরিক একনায়কতন্ত্রে’র বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ এবং নব্বইয়ের দশকে গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ তুলে প্রয়াত সেনাশাসক হুসেন মহম্মদ এরশাদকেও নাম না করে আক্রমণ করেছেন ইউনূস। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘স্বীকৃতি দিয়েছেন’ আর এক সেনাশাসক জিয়াউর রহমানকে। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে রক্তক্ষয়ী সেনা বিদ্রোহকে ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’ বলে চিহ্নিত করে ইউনূস মঙ্গলবার বিএনপি-র প্রতি সহযোগিতার বার্তা দিতে চেয়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে।