Bangladesh Situation

তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন করে গড়া হোক অন্তর্বর্তী সরকার! জাতির উদ্দেশে ভাষণের খসড়াও তৈরি করে ফেলেছিলেন ইউনূস

বৃহস্পতিবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেও ইউনূস তাঁর উপদেষ্টাদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনা করেন। সেখানেই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ১১:১৪
Share:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন। তার আগে ওই দিন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক করেছিলেন ইউনূস। সেখানেই তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বলে খবর। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, বৈঠকেই ইউনূস নতুন একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। জানিয়ে দেন, সেখানে তিনি আর থাকতে চান না। এমনকি, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করতে কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তা জানাতে চেয়েছিলেন ইউনূস। আপাতত সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক ছিল। সেই বৈঠক শেষ হওয়ার পরেও ইউনূস তাঁর উপদেষ্টাদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনা করেন। সূত্রের খবর, সেখানেই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। জানান, বাংলাদেশে প্রতি দিনের আন্দোলন, রাস্তা আটকে রেখে দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ নিয়ে তিনি সার্বিক ভাবে হতাশ। যে সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকার শুরু করেছিলেন, তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একমত হচ্ছে না। ফলে তিনি কাজ এগোতে পারছেন না। তাঁর কাজে নানা দিক থেকে অসহযোগিতা করা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রকে উল্লেখ করে প্রথম আলো জানিয়েছে, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন ইউনূস। ভাষণের খসড়াও এক পর্যায়ে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে, দেশের মানুষের কাছে তা তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণের সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়। পরে তা নিয়ে আবার আলোচনা হতে পারে।


Advertisement

ইউনূস একাধিক বার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়েও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচন হলে তা আদৌ অবাধে এবং সুষ্ঠু ভাবে হবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন খোদ প্রধান উপদেষ্টাই। সূত্রের খবর, ভোটে ব্যালট ছিনতাই আটকানো যাবে কি না, পুলিশ আদৌ ব্যালট ছিনতাই আটকাতে পারবে কি না, ইউনূস নিজেই তা নিয়ে সন্দিগ্ধ। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ব্যর্থতা, কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে ব্যর্থতার দায় তিনি নিতে চান না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

গত ৫ অগস্ট গণআন্দোলনের চাপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে চলে আসেন। তার পর ৮ অগস্ট ইউনূসের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এখন তারাই ক্ষমতায়। কথা ছিল, প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের পরেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে। এখনও কোনও নির্বাচন হয়নি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের উপর নির্বাচনের জন্য চাপ দিতে শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, ন্যূনতম সংস্কার করেই অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আয়োজন করুক। বাকি সংস্কারের কাজ নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দেওয়া হোক। রাজনৈতিক দলগুলির চাপ, সরকারি কাজে অসহযোগিতা নিয়ে বিরক্ত ইউনূস তাই দায়িত্ব ছাড়তে চাইছেন, মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ইউনূসের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement