জুন্টা প্রধান জেনারেল মিন আং হ্লাইং। —ফাইল চিত্র।
সশস্ত্র বিদ্রোহী জোটের ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গণতন্ত্রপন্থীদের চাপে শেষ পর্যন্ত পিছু হটার বার্তা দিল মায়ানমারের সামরিক জুন্টা। জেনারেল মিন আং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার বৃহস্পতিবার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক কার্যকলাপের উপর বিধিনিষেধ তোলার কথা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, জানানো হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে ভোট হবে মায়ানমারে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতন্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। গত সাড়ে চার বছরে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীকে ধারাবাহিক ভাবে নিশানা করেছে মায়ানমার সেনা। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ গড়ে সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। যার পরিণামে সে দেশের বড় অংশই জুন্টার হাতছাড়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোণঠাসা হ্লাইং শেষ পর্যন্ত ভোটের ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর পর্ব মসৃণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
জানুয়ারিতে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর দ্বিতীয় বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ) যুদ্ধবিরতি চুক্তি করায় হ্লাইং সরকার কিছুটা স্বস্তি পেলেও তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ) এবং ‘আরাকান আর্মি’ (এএ)-র সঙ্গে জোট গড়ে ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে জুন্টা ফৌজের উপর। মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ থামাতে গত এক বছর ধরেই চিন তৎপর। জেনারেল হ্লাইংয়ের নতুন ঘোষণায় বেজিংয়ের ‘ভূনিকা’ দেখছেন অনেকেই।