Myanmar Violence

মায়ানমারে মুক্তি এক সাংবাদিকের

সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এক দিকে যেমন বল প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা চলছে, সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখও বন্ধ রাখতে চায় জুন্টা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৬:২২
Share:

বিক্ষোভ: পাথরের টুকরো ছোড়ার জন্য বিশাল গুলতি নিয়ে তৈরি বিক্ষোভকারীরা। সোমবার মান্দালয়ে। রয়টার্স

তিন দিন আগে আটক করা হয়েছিল তাঁকে। গত শুক্রবার দুপুর। মায়ানমারের রাজধানী নেপিদ-র এক আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে রিপোর্টিং করছিলেন আউং থুরা নামের ওই যুবক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র প্রতিনিধি তিনি। একটি সাদা ভ্যানে করে আসা কয়েক জন সাদা পোশাকের লোক আচমকাই আউং ও তাঁর পাশে থাকা আর এক সাংবাদিককে ধরে নিয়ে যায়। অবশেষে আজ মুক্তি দেওয়া হল বিবিসি-র ওই সাংবাদিককে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের তরফে আজ এই খবর জানানো হয়েছে। তবে থুরাকে কেন তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কেনই বা তাঁকে মুক্ত করা হল, তা বিশদে জানায়নি বিবিসি।

Advertisement

সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এক দিকে যেমন বল প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা চলছে, সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখও বন্ধ রাখতে চায় জুন্টা। চল্লিশেরও বেশি সাংবাদিক গ্রেফতার হয়েছেন ইতিমধ্যে। এঁদের মধ্যে অর্ধেক মুক্তি পেলেও বাকিরা এখনও বন্দি। বন্ধ করা হচ্ছে একের পর এক সংবাদমাধ্যমের অফিস। আজই নতুন করে পাঁচটি সংবাদমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল করেছে সেনা।

এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছেন মায়ানমারের গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা। সাহায্যের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন তাঁরা। আজ ভোরে ইয়াঙ্গনের লিয়াং শহরতলি থেকে উড়েছে শয়ে শয়ে লাল বেলুন। নেত্রী আউং সাং সুচি-র মুক্তির পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে সাহায্যের আর্জি জানানো হয়েছে সেখানে। মান্দালয়, মোনিওয়া-র মতো শহরেও আজ সকাল থেকেই পথে নেমেছেন অসংখ্য মানুষ। কোথাও গাড়ির হর্ন বাজিয়ে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

Advertisement

গত কাল নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মান্দালয়ে আট জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ৫০ জন। কাল সারা রাত মেশিন গানের আওয়াজে আতঙ্কে জেগেছিল গোটা শহর। আজ মোনিওয়া-য় মারা গিয়েছেন এক জন।

এই পরিস্থিতিতে সেনা কর্তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। জুন্টার ১১ জন ক্যাডারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ভাবা হয়েছে। একই পথে হাঁটতে চলেছে ব্রিটেন আর আমেরিকাও। তবে জুন্টা কর্তারা এর পরেও বিক্ষোভকারীদের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর কোনও ইঙ্গিতই দিচ্ছেন না। জুন্টা সরকারের কঠোর দমননীতির জন্য ১০.৫ লক্ষ ডলারের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করেছে ফরাসি শক্তি সংস্থা ইডিএফ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি দাবি করেছে, সরকারি ভাবেই নিহতের সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। আসল সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি বলে আশঙ্কা।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সুরে সুর মিলিয়ে মায়ানমারে শান্তি ফেরানোর ডাক দিয়েছেন মালয়েশিয়া সরকারও। আসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলি দাবি করেছে, মায়ানমারে ফের শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি-সহ অবিলম্বে তারা সেখানে নিজেদের প্রতিনিধি পাঠাবে। শীঘ্রই এ নিয়ে আলোচনায় বসবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ দেশের এই সংগঠন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন