ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে চিনেই নজর মোদীর

সরকারি সূত্রের খবর, আগামিকাল ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মূলত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চান মোদী। প্রথমত, চিন কী ভাবে নেপাল-তিব্বতে সড়ক তৈরি করছে তা ফের আমেরিকাকে জানাবে ভারত। ভারত মহাসাগর ও মায়ানমারে চিনা কার্যকলাপের কথাও জানানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫১
Share:

সাক্ষাৎ: নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ম্যানিলায় রবিবার। ছবি: পিটিআই।

এক দিকে প্রাচীন ‘সিল্ক রুট’কে চাঙ্গা করতে চাইছে বেজিং। অন্য দিকে গোটা ভারত মহাসাগরে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে চিনা নৌসেনা। এমনই পরিস্থিতিতে আজ ম্যানিলায় আসিয়ান-ভারত সম্মেলন ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির বৈঠকে যোগ দিতে পৌঁছলেন নরেন্দ্র মোদী। ওই সম্মেলনের সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর পার্শ্ববৈঠকের দিকে আপাতত উৎসুক ভাবে তাকিয়ে রয়েছেন কূটনীতিকেরা। ইতিমধ্যেই নৈশভোজের আসরে ট্রাম্প ও চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গে কিছুটা কথা হয়েছে তাঁর।

Advertisement

এশিয়ায় চিন ক্রমাগত আগ্রাসী মনোভাব দেখানোয় সম্প্রতি একটি গোষ্ঠী গড়তে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা। ভারত ছাড়া তাতে রয়েছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। ফিলিপিন্সের রাজধানীতে এই সম্মেলনে হাজির ওই দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও ম্যালকম টার্নবুলও। তাঁদের সঙ্গেও আলাদা ভাবে বৈঠক করবেন মোদী। ফলে ম্যানিলায় ওই গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের নীল নকশা তৈরির কাজ আরও এগোবে আশা সাউথ ব্লকের।

সরকারি সূত্রের খবর, আগামিকাল ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মূলত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চান মোদী। প্রথমত, চিন কী ভাবে নেপাল-তিব্বতে সড়ক তৈরি করছে তা ফের আমেরিকাকে জানাবে ভারত। ভারত মহাসাগর ও মায়ানমারে চিনা কার্যকলাপের কথাও জানানো হবে। এই পরিস্থিতিতে চিনকে চাপে রাখতে কী ভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব জেমস ম্যাটিসের সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময়ে ওয়াশিংটন-দিল্লি প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভারতকে বিক্রি করতে চাইছে আমেরিকা। দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়েও বিশদে কথা হবে। তৃতীয়ত, আফগানিস্তান প্রসঙ্গও তুলতে চান মোদী। সাউথ ব্লকের মতে, প্রথম দিকে আফগানিস্তান থেকে সরে আসার পথ খুঁজছিলেন ট্রাম্প। সেই সুযোগে সে দেশে সক্রিয় হয় রাশিয়া। পাকিস্তান, রাশিয়া ও চিন নতুন অক্ষ তৈরি হয়। আইএসকে রুখতে তারা তালিবানকে মদত দিতে শুরু করে। তার ফলে আঘাত লাগে ভারতীয় ও মার্কিন স্বার্থে। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্প বাধ্য হয়েই আফগানিস্তান সম্পর্কে নীতি পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন বলে মনে করছে দিল্লি। ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে ফের আফগানিস্তানে নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চান প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

ম্যানিলার সম্মেলনের সময়ে চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গেও পার্শ্ববৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে মোদীর। কূটনীতিকদের মতে, বহুস্তরীয় কূটনীতি ছাড়া এশিয়ার বর্তমান জটিল পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব নয়। ট্রাম্পও সম্প্রতি চিন সফরে গিয়ে বেজিং সম্পর্কে সুর নরম করেছেন। চিনফিং‌য়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার চিত্রও দেখেছে দুনিয়া। ফলে চিনের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে জোটে সামিল হলেও বেজিং‌য়ের সঙ্গে কূটনীতি বন্ধ রাখার প্রশ্নই নেই। বরং ডোকলামে চিনা আগ্রাসনের মতো ঘটনা রুখতে কূটনৈতিক পথে চেষ্টা জারি রাখা উচিত বলে মত সাউথ ব্লকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন