শেরপাদের বিমার অঙ্ক বাড়াচ্ছে নেপাল সরকার

শেরপাদের জন্য বিমার অঙ্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল নেপাল সরকার। এত দিন পর্যন্ত পর্বতারোহণের অনুমতি পেতে গেলে শেরপাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ হাজার ডলারের (প্রায় ছ’লক্ষ দশ হাজার টাকা) বিমা করানো বাধ্যতামূলক ছিল। এখন তা বেড়ে দাঁড়াল ১৫ হাজার ডলারে (ন’লক্ষ সতেরো হাজার টাকা)।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৬
Share:

শেরপাদের জন্য বিমার অঙ্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল নেপাল সরকার। এত দিন পর্যন্ত পর্বতারোহণের অনুমতি পেতে গেলে শেরপাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ হাজার ডলারের (প্রায় ছ’লক্ষ দশ হাজার টাকা) বিমা করানো বাধ্যতামূলক ছিল। এখন তা বেড়ে দাঁড়াল ১৫ হাজার ডলারে (ন’লক্ষ সতেরো হাজার টাকা)। পাহাড়ে গিয়ে কোনও শেরপা দুর্ঘটনায় মারা গেলে এই অর্থ পাবে তাঁর পরিবার।

Advertisement

প্রত্যেক বছর বিমার পরিমাণ অল্পবিস্তর বাড়ে ঠিকই। কিন্তু এ বছর এক ধাক্কায় তা বেড়ে গেল অনেকটা। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে খুম্বু আইসফলের কাছে তুষার ধসে প্রাণ হারান ১৬ জন শেরপা। তখনই কথা উঠেছিল, যে পরিমাণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেরপারা পাহাড়ে যান তার বদলে তাঁদের প্রাপ্তির ভাঁড়ার নেহাতই শূন্য। এপ্রিলের রেশ কাটতে না কাটতেই এক মাসের মাথায় ফের দুর্ঘটনা ঘটে কাঞ্চনজঙ্ঘার পশ্চিম শৃঙ্গ ইয়ালুং কাং-এর পথে। ২০ মে ছন্দা গায়েনের সঙ্গেই বরফরাজ্যে হারিয়ে যান তাঁর দুই সঙ্গী শেরপা দাওয়া ও তেমবা। মনে করা হচ্ছে, জোড়া বিপর্যয়ের ফলেই বিমার অঙ্ক এক ধাক্কায় এতটা বাড়ানো হল।

শেরপাদের স্বাস্থ্য বিমার পরিমাণও তিন হাজার ডলার (এক লক্ষ তিরাশি হাজার টাকা) থেকে বাড়িয়ে চার হাজার ডলার (দু’লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা) করা হয়েছে। নেপালের পর্যটন মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে নয়া নীতি।

Advertisement

সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই খুশি শেরপারা। বিমার টাকা বাড়ানোর দাবি তাঁদের দীর্ঘদিনের। অভিযানের ছাড়পত্র দেওয়ার আগে রয়্যালটি বাবদ সরকারকে একটা মোটা অর্থ দিতে হয় পর্বতারোহীদের। তার কিছুটা অংশ থেকে শেরপাদের জন্য তহবিল খুলুক সরকার, এমন দাবিও উঠেছিল আগেই। এ নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও সরকারি সূত্রের খবর, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে।

বিমার অঙ্ক বাড়ানোর প্রসঙ্গে দার্জিলিঙের পাসাং শেরপা জানালেন, “মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয় তা তো অপূরণীয়। কিন্তু সব কিছু জেনেও ঝুঁকি নিয়েই পেটের টানে পাহাড়ে যেতে হয় আমাদের। তাই বাস্তবের কথা ভাবলে, এটা খুবই ভাল পদক্ষেপ। মৃতের পরিবারের কিছুটা অন্তত সুরাহা হবে।” নেপালের পর্বতারোহণ ব্যবস্থাপক এক সংস্থার কর্ণধার লোরেন শেরপার মতে, “নেপালের শৃঙ্গগুলোয় বিদেশি অভিযাত্রীদের সংখ্যা বাড়ছে প্রতি বছরই। ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এপ্রিল-মে মাসের দুর্ঘটনার পর শেরপারা এখন অনেক বেশি সচেতন। তাই এই সিদ্ধান্তটা জরুরি হয়ে পড়েছিল।”

সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অসামরিক উদ্যোগে প্রথম বাঙালি এভারেস্ট-জয়ী বসন্ত সিংহরায়ও। তাঁর কথায়, “সব খরচই যে হারে বাড়ছে, বিমার অঙ্কও সে ভাবেই বাড়া উচিত। শেরপাদের সাহায্য ছাড়া তো পাহাড়ে চড়া সম্ভব নয়। তাই তাঁদের অনুপস্থিতিতে পরিবারগুলো যাতে ভেসে না যায় সেই ব্যবস্থাও করা দরকার।”

গত এপ্রিলে তুষার ধসে ১৬ জন শেরপা চাপা পড়ে গেলে বেঁকে বসেছিলেন অন্যরাও। ফলে অভিযান না করেই ফিরতে হয়েছিল ৩৩৪ জন বিদেশি পর্বতারোহীকে। নেপালের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে থাকে পর্বত অভিযানগুলির উপর। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটলে দেশের অর্থনীতিতে তার বড়সড় প্রভাব পড়বে। আপাতত শেরপাদের নিরাপত্তাতেই তাই জোর দিতে চাইছে সরকার।

উত্তপ্ত পাকিস্তান

পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে তাহির উল কাদরির সমর্থকদের সংঘর্ষে মৃত্যু হল চার জনের। বহু মানুষ আহত। পুলিশ ৫০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আগামিকাল লাহৌরে কাদরির সমর্থকদের একটি সমাবেশও আছে। তার আগে পঞ্জাব প্রদেশে গত কাল থেকে সমর্থকদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এর তীব্র নিন্দা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন