(বাঁ দিকে) কুলমান ঘিসিং এবং সুশীলা কার্কী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
নেপালের অন্তর্বতী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কীর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হল সোমবার। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের কাছে শপথবাক্য পাঠ করলেন তিন মন্ত্রী— কুলমান ঘিসিং, রামেশ্বরপ্রসাদ খনাল এবং ওমপ্রকাশ আরিয়াল। প্রধানমন্ত্রী সুশীলার সুপারিশে সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তিন জনকে অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভায় শামিল করেছেন বলে সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার দফতর বণ্টনের কাজও হয়েছে সোমবার। প্রধানমন্ত্রী সুশীলা নিজের হাতে বিদেশ, প্রতিরক্ষা শিল্প, বাণিজ্য, সরবরাহ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক রেখেছেন। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন রামেশ্বরপ্রসাদ। কুলমানের হাতে, জ্বালানি, জলসম্পদ ও সেচ, পরিকাঠামো, পরিবহণ ও নগর উন্নয়নের দায়িত্ব। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র এবং আইন, বিচার ও সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন ওমপ্রকাশ।
নেপালের ইতিহাসে প্রথম মহিলা হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন সুশীলা। প্রথম মহিলা হিসেবে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন তিনি। গত বুধবারই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সুশীলাকে বেছে নিয়েছিলেন আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবরা। সে দিন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রথমে তাঁর কাছে সম্মতি চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল আন্দোলনকারীদের তরফে। কিন্তু বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের একাংশের তরফে প্রাক্তন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কুলমানের নাম উঠে আসায় কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। প্রসঙ্গত, জেন জ়ি আন্দোলনের জেরে মঙ্গলবার ওলির ইস্তফার পরে প্রাথমিক ভাবে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পরবর্তী সরকার প্রধান হিসাবে কাঠমান্ডুর নির্দল মেয়র, তথা জনপ্রিয় র্যাপার বছর পঁয়ত্রিশের বলেন্দ্র শাহ ওরফে বলেনের নাম সামনে এনেছিল। কিন্তু বুধ এবং বৃহস্পতিবার ঘটনাপ্রবাহের নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে।
শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবরা ভোটাভুটির মাধ্যমে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ৭২ বছরের সুশীলাকে বেছে নেন। এ বার তাঁর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন কুলমান। প্রসঙ্গত, নেপালে বিদ্যুতের দীর্ঘমেয়াদি ঘাটতি দূর করার নেপথ্যে নানা অবদান রয়েছে কুলমানের। ১৯৯৪ সালে ঘিসিং দেশের বিদ্যুৎ বোর্ডে যোগ দিয়েছিলেন। তার পর থেকে নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ বোর্ডের সর্বেসর্বা হন। সে সময় চরম বিদ্যুৎবিভ্রাটে ভুগছিল ভারতের প্রতিবেশী দেশ। কখনও কখনও দিনে ১৮ ঘণ্টাও লোডশেডিং চলত। সেই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বোর্ডের হাল ধরেন ঘিসিং। মেটান দেশের বিদ্যুৎসঙ্কট। অন্য দুই মন্ত্রীর মধ্যে রামেশ্বরপ্রসাদ প্রাক্তন আমলা। নেপালের প্রাক্তন অর্থসচিব। ওমপ্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের পরিচিত আইনজীবী।