একের পর এক মামলার ফাঁসে ক্রমশই জেরবার অবস্থা ক্ষমতাচ্যুত পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের। আজ আরও একটি দুর্নীতি মামলায় চার্জ গঠন করা হল তাঁর বিরুদ্ধে।
আপাতত লন্ডনে স্ত্রীর কাছে রয়েছেন শরিফ। গলার ক্যানসারে আক্রান্ত শরিফ-পত্নী। লন্ডনে তাঁর কেমোথেরাপি চলছে। ২৩ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা শরিফের। আজ তাই তাঁর হয়ে আইনজীবী জাফির খানের উপস্থিতিতে চার্জ পড়ে শোনায় দুর্নীতি দমন আদালত। অভিযোগ, দুবাইয়ের একটি সংস্থা থেকে বিপুল রোজগার রয়েছে শরিফের। আর তার গোটাটাই দেশের আয়কর দফতরের কাছ থেকে লুকিয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আইএস মুক্ত রাকা, তবে সঙ্কট কাটেনি
গত কালই শরিফ ও তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে লন্ডনে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগে চার্জ গঠন করে দুর্নীতি দমন আদালত। সম্প্রতি পানামার একটি ল’ফার্মের ফাঁস করা তথ্যে দাবি করা হয়েছিল, একটি অস্ত্র কারখানার যাবতীয় কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করেন শরিফ ও তাঁর তিন ছেলেমেয়ে। এবং সেই কারখানার অর্থেই পাক সরকারকে সম্পূর্ণ লুকিয়ে গিয়ে লন্ডনে একটি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, পানামা নথিতে দাবি করা হয়, বিভিন্ন বিদেশি অ্যাকাউন্টে বিপুল অর্থ রয়েছে শরিফের। আর সেই অর্থে বিদেশে বহু সম্পত্তি কিনেছেন তিনি, যার সবটাই শরিফ লুকিয়ে গিয়েছেন দেশের আয়কর দফতরের থেকে। এ খবর প্রকাশ্যে আসার পরে আলোড়ন পড়ে যায় পাক-রাজনীতিতে। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জবাব চায় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শরিফ-পরিবারের উত্তরে অসন্তুষ্ট শীর্ষ আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করার নির্দেশ দেয় দুর্নীতি-দমন আদালতকে। শরিফ দাবি করেছিলেন, সব সম্পত্তি তাঁর দুই ছেলে হাসান ও হুসেনের। কিন্তু এঁদের কেউ-ই আদালতের সামনে আসতে রাজি হননি। কারণ হিসেবে তাঁদের দাবি ছিল, দু’জনেই ব্রিটিশ নাগরিক। আর তাই পাক-আইন তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
দুর্নীতি দমন আদালতের চার্জেও হাসান ও হুসেনের নাম নেই। শুধু শরিফ-কন্যা মরিয়ম ও জামাই সফদরের নাম রয়েছে। দুর্নীতি দমন আদালতকে আগামী ছ’মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখছেন সুপ্রিম কোর্টেরই এক বিচারপতি।
শরিফ অবশ্য গোটা বিষয়টাকেই রাজনীতির খেলা হিসেবে দেখছেন। যদিও কাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন, আদালতকে সে প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি তিনি।