ব্রাসেলস হামলার মুখ নিধি ফের উড়তে চান

জঙ্গিরা জাভেনতেম বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে, শুনেছিলেন তিনি। প্রেমিকাকে আশ্বস্ত করতে তাই মেট্রো থেকে টেক্সট করেন— ‘‘আমি ঠিক আছি।’’ মিনিটখানেকও কাটেনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০২:২২
Share:

স্মরণ: ব্রাসেলসে অনুষ্ঠানে নিধি চাপেকর। বুধবার। ছবি :রয়টার্স।

জঙ্গিরা জাভেনতেম বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে, শুনেছিলেন তিনি। প্রেমিকাকে আশ্বস্ত করতে তাই মেট্রো থেকে টেক্সট করেন— ‘‘আমি ঠিক আছি।’’ মিনিটখানেকও কাটেনি। বিস্ফোরণে উড়ে যায় কামরা। ছিন্নভিন্ন বছর পঞ্চাশের ডেভিড ডিক্সনের দেহ। এতটাই বিকৃত যে, প্রেমিকা তথা তাঁর সন্তানের মা শার্লটকে ডেভিডের দেহ শনাক্ত করতে হয় ডিএনএ পরীক্ষায়। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের এক বছর পূর্ণ হল আজ। দেশবাসী স্মরণ করলেন ডেভিড এবং আরও ৩১ জনকে— যাঁরা প্রাণ হারিয়েছিলেন সে দিন।

Advertisement

২০১৬ সালের ২২ মার্চ। সকাল আটটার মিনিট দুয়েক আগে প্রথম বিস্ফোরণ জাভেনতেম বিমানবন্দরে। পরপর দু’টো। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মেট্রো রেলেও হামলা চালায় আইএস জঙ্গিরা। মেলবিক মেট্রো স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ট্রেনে উঠছে আত্মঘাতী জঙ্গি— ২৭ বছরের খালিদ এল বাকরাউই। ডেভিড ছিলেন ওই কামরাতেই। বিমানবন্দরে হামলার দায়িত্বে ছিল খালিদের দাদা ইব্রাহিম।

আজ সকাল ঠিক ৭টা ৫৮ মিনিটেই জাভেনতেম স্মরণ করেছে নিহতদের। অনুষ্ঠানে ছিলেন বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ, রানি ম্যাথিলডে, প্রধানমন্ত্রী চার্লস মাইকেল। মেলবিকের দৃশ্যটা ছিল আলাদা। নীরবতা নয়, হাততালি দিয়ে সেখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নেন বেলজিয়ামবাসী। উদ্বোধন হয়েছে শিল্পী জঁ অঁরি কম্পেরের তৈরি ইস্পাতের স্মৃতিসৌধের। ঘটনাচক্রে, আজ হামলা হয় লন্ডনের পার্লামেন্টে।

Advertisement

ব্রাসেলসের হামলায় সে দিন জখম হন দুই ভারতীয়ও। জেট এয়ারওয়েজের কর্মী নিধি চাপেকর এবং অমিত মোতওয়ানি। বিস্ফোরণের পরেই ফোনে নিজস্বী, ঘটনাস্থলের কয়েকটা ছবি তুলে বাড়ির লোককে পাঠান অমিত। বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম বাঁচব না। তাই ছবি পাঠানোর দরকার ছিল।’’ অমিতের আঘাত ছিল চোখে। নিধির চোট ছিল গুরুতর। বিমানবন্দরের চেয়ারে বসে থাকা বিধ্বস্ত-আতঙ্কিত নিধির মুখ ছেয়ে গিয়েছিল সর্বত্র। সেই থেকে শারীরিক অক্ষমতার সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। এক মাস কোমায়। আরও কয়েক মাস বেলজিয়ামে চিকিৎসার পরে দেশে ফিরেছিলেন। এখনও দু’টো অস্ত্রোপচার বাকি। গ্লাভস দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় হাত জোড়া। তবু খুব দ্রুত কাজে ফিরতে চান। উড়তে চান। দুই সন্তানের মা নিধি বললেন, ‘‘সকলকে দেখাতে চাই, সন্ত্রাসবাদ জীবনকে থামিয়ে দিতে পারে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement