International News

এক বর্ণ ইংরেজি না জেনে বিহার থেকে ব্রিটেন পাড়ি, এখন তিনি নক্ষত্র

শশী গোড়বোলেকে মনে পড়ে? স্বামীর সোহাগ, ছেলে-মেয়ের ভালবাসা, বাড়িতে বসে নিজের ছোটখাটো লাড্ডুর ব্যবসা। জীবন প্রায় পরিপূর্ণ, তৃপ্তির। প্রায়, কারণ সব থেকেও কোথায় যেন কী একটা নেই! শশীর প্রতি তাঁদের টান রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে একরাশ তাচ্ছিল্যও। শুধুমাত্র ইংরেজি না জানার জন্য!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ১৯:০২
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

শশী গোড়বোলেকে মনে পড়ে? স্বামীর সোহাগ, ছেলে-মেয়ের ভালবাসা, বাড়িতে বসে নিজের ছোটখাটো লাড্ডুর ব্যবসা। জীবন প্রায় পরিপূর্ণ, তৃপ্তির। প্রায়, কারণ সব থেকেও কোথায় যেন কী একটা নেই! শশীর প্রতি তাঁদের টান রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে একরাশ তাচ্ছিল্যও। শুধুমাত্র ইংরেজি না জানার জন্য!

Advertisement

তবে ঘটনাচক্রে নিউ ইয়র্কের মাটিতে পা রাখার চার সপ্তাহের মধ্যেই সেই শশীই হয়ে উঠলেন ইংরেজিতে চোস্ত। ‘ইংলিশ ভিংলিশ’-এর নায়িকা শ্রীদেবী ওরফে শশীর মতোই বেশ মিল বাস্তবের আশা খেমকার। বরং বলা ভাল, আরও বেশি মিল।

২৫ বছর বয়সে স্বামী-সন্তানের সঙ্গে ব্রিটেন পাড়ি দেওয়ার সময় একফোঁটাও ইংরেজি জানতেন না বিহারের সীতামারি জেলার আশা। চল্লিশ বছর পর সেই আশাই ব্রিটেনের অন্যতম বড় কলেজের প্রিন্সিপাল এবং সিইও। গত শুক্রবার বার্মিংহ্যামের এক অনুষ্ঠানে তাঁকে ‘এশিয়ান বিজনেসউওম্যান অব দ্য ইয়ার’-এ সম্মানিত করা হয়েছে। বিদেশের মাটিতে শশীর মতোই ইংরেজি শিখে সাফল্যের মুখ দেখেছেন আশা। সে দেশের শিক্ষাজগতের এক অন্যতম নক্ষত্র তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন

ক্যাটে ৯৮.৫৫% নম্বর পেলেন ৮০% দৃষ্টিহীন প্রাচী

ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের থেকে ওবিই পদক পাচ্ছেন আশা খেমকা। ছবি: সংগৃহীত।

শশী জানিয়েছেন, মাত্র ১৩ বছরেই স্কুলের পাঠ চুকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। এর কয়েক বছর পরে বিয়ে। পঁচিশ পেরতে না পেরতেই সন্তানের মা। স্বামীর সঙ্গে বিলেত এসে একেবারে ফাঁপরে পড়েছিলেন। সাধারণ ইংরেজিতেও কথাবার্তা চালাতে পারতেন না। সে সময়ই ঠিক করলেন ইংরেজি শিখতে হবে। সেই শুরু। নিজেই নিজেকে শেখাতে শুরু করলেন আশা। বাড়িতে বসে টেলিভিশনের বাচ্চাদের অনুষ্ঠান দেখতে শুরু করলেন। বাচ্চাদের স্কুলে দিতে গিয়ে তাদের মায়েদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলতে লাগলেন। এ ভাবেই ধীরে ধীরে ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ হতে শুরু হওয়া। এক সময় বুঝলেন, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে একটা পোশাকি ডিগ্রি প্রয়োজন। ভর্তি হয়ে গেলেন কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে বিজনেস ডিগ্রি লাভ।

এর পর লেকচারার হিসাবে ওয়েস্ট নটিংহ্যামশায়ার কলেজে চাকরি। ধীরে ধীরে সেখানকার প্রিন্সিরাল এবং সিইও। আপাতঅসম্ভব এই কাহিনি কেমন যেন গল্পকথার মতো শোনায়। তবে এ সবই ঘটেছে বিলেতের মাটিতে। ‘রূপকথা’ এখানেই শেষ নয়। শশী যেমন শেষ মুহূর্তে তাঁর বক্তৃতার জোরে ইংরেজি ক্লাশের ডিগ্রি পেয়ে যান আশাও তেমন ভাবেই গত ২০১৩-তে ‘ডেম কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। যা ব্রিটেনের অন্যতম অসামরিক সম্মান। গত ১৯৩১-এ ব্রিটিশ ভারতের ধার প্রদেশের মহারানি লক্ষ্মী দেবী বাঈ সাহিবার পর তিনি হলেন প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত যিনি এই সম্মানলাভ করলেন।

শশীর গল্পের মতোই এ যেন শেষ পাতে আরও বড় সাফল্যের মুকুট উঠল আশার মাথায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন