রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নোবেল পদক। — ফাইল চিত্র।
৬ অক্টোবর থেকে এক এক করে বিভিন্ন বিভাগে নোবেল প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেছে নোবেল কমিটি। শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো ২০২৫ সালে এই পুরস্কার পেয়েছেন। নোবেল প্রাপকের নামের সঙ্গে মানুষজনের আগ্রহ প্রাপ্য অর্থ নিয়েও। অনেকের মনেই প্রশ্ন, পুরস্কার মূল্য হিসেবে কত টাকা পাবেন বিজয়ীরা। নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইট বলছে, বিজয়ীকে চলতি বছর ১ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনর দেওয়া হবে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পুরস্কারমূল্য হিসেবে তিনি কত টাকা পেয়েছিলেন, সেই প্রশ্নও রয়েছে দেশবাসীর মনে।
২০২৫ সালের মতো ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের নোবেল বিজয়ীরাও প্রত্যেকে পেয়েছিলেন ১ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনর। ২০২২ সালে এই অঙ্কটা ছিল এক কোটি সুইডিশ ক্রোনর। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ন’কোটি টাকা।
১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়েছিলেন। ইউরোপের বাইরে তিনিই প্রথম এই পুরস্কার পান। পুরস্কারমূল্য হিসাবে কবি পেয়েছিলেন আট হাজার পাউন্ড। সে সময় ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য ছিল এক লক্ষ ২০ হাজার টাকার আশপাশে, যা ওই আমলে নেহাত কম নয়।
কয়েক বছর অন্তর নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বৃদ্ধি করে থাকে কমিটি। বৃদ্ধি পেতে পেতে এখন তা এসে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনরে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকার আশপাশে।
সুইডেনের রসায়নবিদ তথা ডিনামাইটের আবিষ্কারক অ্যালফ্রেড নোবেলের ইচ্ছায় ১৯০১ সাল থেকে এই নোবেল পুরস্কার চালু করা হয়। মানুষের স্বার্থে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিতেই এই পুরস্কার। ছ’টি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়— শান্তি, সাহিত্য, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, শরীরবিদ্যা বা মেডিসিন, অর্থনীতি। মৃত্যুর এক বছর আগে, ১৮৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর একটি ইচ্ছাপত্রে সই করে নিজের সম্পত্তির বেশিরভাগটাই দান করে যান নোবেল। সে সময় তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনর। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৮ কোটি টাকা। সেই সম্পত্তির মূল্য এখন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নোবেলের রেখে যাওয়া অর্থই দেওয়া হয় পুরস্কারপ্রাপকদের।
চলতি বছর নোবেল শান্তিতে ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৯৪টি সংগঠনের সম্মাননার জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সেই তালিকায় ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম। শেষ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়াকেই এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দিচ্ছে নোবেল কমিটি। অর্থের সঙ্গেই একটি পদক এবং শংসাপত্র দেওয়া হয় বিজয়ীকে। নোবেল শান্তির পদক তৈরি করেছিলেন নরওয়ের স্থপতি গুস্তাভ ভিগল্যান্ড এবং সুইডেনের খোদাইশিল্পী এরিক লিন্ডবার্গ। ১৯০২ সালের অনুষ্ঠানে প্রথম বার দেওয়া হয়েছিল এই পদক। আগে ২৩ ক্যারেট সোনায় তৈরি হত পদক। ১৯৮০ সাল থেকে তা ১৮ ক্যারেট সোনায় তৈরি হচ্ছে। তবে পদকের ব্যাস একই থাকছে।