Nobel Peace Prize 2025

ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, নোবেল শান্তি পুরস্কার মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে

একনায়কতন্ত্র থেকে ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নেপথ্যেও রয়েছেন এই মারিয়াই। সে কারণে এ বছর নরওয়ের নোবেল কমিটি তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:০২
Share:

মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: সংগৃহীত।

জল্পনার অবসান। ২০২৫ সালে নোবেল শান্তি পাচ্ছেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো। দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সচেতন করেছেন। তাঁদের সেই অধিকারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন মারিয়া। একনায়কতন্ত্র থেকে ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নেপথ্যেও রয়েছেন এই মারিয়াই। সে কারণে এ বছর নরওয়ের নোবেল কমিটি তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার অসলোতে মারিয়ার নাম ঘোষণা করেছে কমিটি। মঙ্গলবারই ছিল তাঁর জন্মদিন।

Advertisement

চলতি বছর নোবেল শান্তিতে ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৯৪টি সংগঠনের সম্মাননার জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সেই তালিকায় ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম। শেষ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়াকেই এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দিচ্ছে নোবেল কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান জর্জেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস জানান, ভেনেজুয়েলার বিরোধী দল এক কালে দ্বিধাবিভক্ত ছিল। তাদের একত্রিত করার কৃতিত্ব মারিয়ার। বিরোধীদলগুলিকে একত্রিত করে অবাধ নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের দাবি তুলে ধরেছেন তিনি।

৫৮ বছরের মারিয়া ভেনেজ়ুয়েলার ‘লৌহ মানবী’ বলে পরিচিত। তাঁর মা ছিলেন মনস্তত্ত্ববিদ। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন মারিয়া। ২০১৩ সালে ভেনেজুয়েলায় উদার রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়, যার নাম ‘ভেন্টে ভেনেজুয়েলা’। সেই দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মারিয়া। তিনি বিবাহিত। তিন সন্তান রয়েছে তাঁর।

Advertisement

গত বছর ভেনেজুয়েলায় ভোটের সময় কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় দেশের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন নিকোলাস মাদুরো। তাঁর দলের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি করার অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই অভিযোগ যাঁরা তুলেছিলেন, তাঁদের সামনের সারিতে ছিলেন মারিয়া। সে জন্য মারিয়াকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এক বার গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। তবু মারিয়াকে দমানো যায়নি। এমনকি, ২০২৪ সালের ভোটে মারিয়াকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শামিল হতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তবে দেশবাসী মনে করেন, আসল বিজয়ী মারিয়াই। সে কারণে কমিটি তাঁর নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বলে, মারিয়া হলেন ‘সাহসী এবং শান্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চ্যাম্পিয়ন’। কমিটি আরও বলে, ভেনেজুয়েলায় যখন ‘অন্ধকার’ তখনও গণতন্ত্রের আগুন জ্বালিয়ে রেখেছিলেন মারিয়া।

এ বছর নোবেল শান্তি মনোনয়নের তালিকা নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। সেখানে নাম ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। একাধিক বার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন তিনি। নিজেই নিজেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার বলেছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের তরফে ট্রাম্পের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘দ্য পিস প্রেসিডেন্ট’, অর্থাৎ শান্তির প্রেসিডেন্ট! বুধবার ট্রাম্প নিজেও তাঁর পুরস্কার প্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত এ বছর আর শিকে ছিঁড়ল না ট্রাম্পের।

২০২৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পায় জাপানের নিহন হিদানকিও। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে কাজ করে এই জাপানি সংগঠন। নোবেল কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, পৃথিবীকে পরমাণু বোমা থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে অসামান্য অবদান রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement