বিপক্ষে ভয়ঙ্কর যোদ্ধা। ক্ষণে ক্ষণে ছুঁড়ে দিচ্ছে কড়া চ্যালেঞ্জ। চোখের সামনে ধেয়ে আসছে মৃত্যু। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে শত্রুকে ধরাশায়ী করতে হবে। কিন্তু গুলি-বারুদ কিংবা কামান নয়। শত্রুপক্ষকে মোকাবিলা করতে বিষাক্ত পোকা থেকে সাপ— সব কিছুরই ব্যবহার হয়েছে যুদ্ধে। অবাক হলেন? এমনটাই সত্যি। এমন কোনও জিনিস নেই যার ব্যবহার মানুষ করেনি। প্রতিপক্ষকে নিকেশ করার জন্য বিষাক্ত পোকামাকড় ব্যবহারের এই পদ্ধতিকে বলে ‘এন্টেমোজিক্যাল ওয়ারফেয়ার’। হাতিয়ার হিসেবে যুদ্ধে যে বিষাক্ত পোকামাকড় ব্যবহার করা হয় তাকে জৈব অস্ত্র বলা হয়। ইতিহাসে জৈব অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে বহু বার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা যখন চিনের মূল ভূখণ্ড আক্রমণ করেছিল তখন মাঞ্চুরিয়ার পিন ফানে এক গোপন মিশন শুরু হয়েছিল তারা। ওই মিশনের কাজ করত ইউনিট-৭৩১। সবচেয়ে বিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। কিন্তু, ইতিহাস বলে জাপানের এই গোপন মিশন ছিল আরও ভয়ঙ্কর। জাপানি দল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করত মাছিদের। এই মাছি কুড়ি থেকে চব্বিশ হাজার প্লেগ ভাইরাস ছড়াতে পারত। জাপানের গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, তাদের দেশের সেনারা বেলুনের মধ্যে প্লেগ ভাইরাস বহনকারী ওই মাছি ছেড়ে দিয়েছিল আমেরিকায়। সেই মিশনে তিন হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে ওই রিপোর্টে।
শুধুমাত্র আধুনিক যুগেই নয়, অস্ত্র হিসেবে বিষাক্ত পোকামাকড়ের ব্যবহার হয়েছিল ৩০০ খ্রিস্ট পূর্বের রোমেও। শত্রু নিধনের অস্ত্র হিসেবে সে সময় মৌমাছির ব্যবহার করা করেছিল। জাহাজে যুদ্ধ চলাকালীন রোমান সৈনিকেরা কাচের বোতলে ভরে মৌমাছি ছুড়ে মারত। এর কামড় থেকে বাঁচতে বিপক্ষের সৈনিকেরা জলে ঝাঁপিয়ে পড়ত। তার ফলেও বহু সৈনিকের মৃত্যু ঘটত। রোমান সম্রাট সেপটিমাস যখন মেসোপটেমিয়া আক্রমণ করেন তখন তিনি সঙ্গে নিয়ে আসেন হাজার হাজার সৈন্য। রাস্তায় পড়ে বিশাল আকৃতির ৪০ ফুট উঁচু হাটরা দূর্গ। এর ভিতরে প্রজাদের নিয়ে বাস করতেন রাজা বার্সামিয়া। তাঁরা রোমানদের সঙ্গে যুদ্ধে কোনও ভাবে রাজি ছিলেন না। রোমানদের খরত করতে সম্রাট সেপটিমাস ওই দূর্গের ভিতরে ছেড়ে দিয়েছিলেন হাজার হাজার বিছে।
আরও পড়ুন