আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়ার খনিজ তেল কেনার ক্ষেত্রে ইউরোপের একটিমাত্র দেশকে ছাড় দেবে আমেরিকা। অন্য কোনও দেশ ওই তেল কিনলেই তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউস থেকে এ কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোন দেশকে ছাড় দেওয়া হবে, কেন এই ব্যতিক্রম, নিজেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
প্রায় চার বছর ধরে পূর্ব ইউরোপে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প নিজে এই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করেছেন একাধিক বার। কিন্তু সাফল্য মেলেনি। আমেরিকার দাবি, রাশিয়া তেলের ব্যবসা চালিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করছে। তাই তেলের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারলে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য হবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই যুক্তিতে আমেরিকা চড়া হারে শুল্ক আরোপ করেছে ভারতের উপরেও। রাশিয়ার তেল কেনার কারণে মার্কিন পণ্যে ভারতের উপর চাপানো হয়েছে ৫০ শতাংশ কর। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলির উপরেও ক্ষুব্ধ ট্রাম্প। কারণ, ওই মহাদেশের বহু দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে চলেছে।
রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে ইউরোপে একমাত্র ব্যতিক্রম হতে পারে হাঙ্গেরি, জানিয়েছেন ট্রাম্প। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে তেল বা গ্যাস কেনা হাঙ্গেরির পক্ষে খুব কঠিন। তাই বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে ওদের ছাড় দেওয়া হবে।’’
বস্তুত, হাঙ্গেরি ইউরোপের একেবারে মধ্য ভাগে অবস্থিত। চার দিকেই রয়েছে অন্য দেশের ভূখণ্ড, কোথাও কোনও সমুদ্র নেই। অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং সার্বিয়া দ্বারা পরিবেষ্টিত এই দেশের পক্ষে খনিজ তেলের একমাত্র ভরসা রাশিয়াই। প্রধানমন্ত্রী অরবান এই যুক্তিতেই ট্রাম্পকে রাজি করিয়েছেন। আবার একই যুক্তিতে মস্কোকেও সন্তুষ্ট রেখে চলে হাঙ্গেরি। এটি অরবানের রাজনীতির অন্যতম কৌশল। আগামী বছরে সে দেশে ভোট রয়েছে। ভোটারদের সস্তায় রাশিয়ার তেলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার বৃহত্তম দু’টি খনিজ তেল সংস্থাকে গত মাসে নিষিদ্ধ (ব্ল্যাকলিস্টেড) করেছে আমেরিকা। বলা হয়েছে, এই দুই সংস্থার কাছ থেকে কোনও দেশ তেল কিনলে তাদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। একমাত্র হাঙ্গেরি সেই নিষেধাজ্ঞায় ছাড় পেল। অরবানের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘পুতিনকে বোঝেন অরবান, ওঁকে খুব ভাল করে চেনেন। তিনিও মনে করছেন, যুদ্ধ শীঘ্র শেষ হবে।’’