Nepal

নেপথ্যে চিনা মদত? ভারতীয় ভূখণ্ড জুড়ে নিয়েই নেপাল সংসদে পেশ নয়া মানচিত্র বিল

বিরোধীরাও এই বিলে সমর্থনের বার্তা দিয়েছে। ফলে বিল পাশ হয়ে যাওয়া এখন কার্যত সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাঠমান্ডু শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ১৪:৩৭
Share:

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (বাঁ দিকে)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র

প্রকাশিত হয়েছিল আগেই। ভারতের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও এ বার নয়া ম্যাপে সরকারি সিলমোহর দেওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগলো নেপাল। দু’দেশের মধ্যে সঙ্ঘাতের আবহেই রবিবার নেপালের সংসদে পেশ হল ‘ম্যাপ আপডেট বিল’। নয়া ম্যাপে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানিলিপুলেখ-কে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে বিরোধীরাও এই বিলে সমর্থনের বার্তা দিয়েছে। ফলে বিল পাশ হয়ে যাওয়া এখন কার্যত সময়ের অপেক্ষা। আর সেটা হলে অবধারিত ভাবেই নয়াদিল্লি-কাঠামান্ডু সঙ্ঘাত আরও তীব্র হবে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিকদের একাংশ।

Advertisement

বিল পেশ হওয়ার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু সংবিধান সংশোধনী বিলে দুই তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন দরকার হয়। তাই সব দিক মেপে এগোতে চাইছিল কেপি শর্মা ওলি সরকার এবং তাঁর দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। সেই কারণেই বিল পেশের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবার নেপালের প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর ম্যাপ আপডেট বিলকে সমর্থনের বার্তা দেয়। তার পরেই রবিবার সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ এই বিল পেশ করেছেন নেপালের আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি। নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ায় ‘সমাজবাদী জনতা পার্টি নেপাল’ এবং ‘রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি নেপাল’-এর বিরোধিতা সত্ত্বেও বিল পাশ করাতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত কূটনৈতিক শিবিরের। একই ভাবে নেপালের সংসদের উচ্চকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতেও পাশ হয়ে যাবে এই ম্যাপ আপডেট বিল।

লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ নিয়ে ভারত-নেপাল বিবাদ দীর্ঘদিনের। ভারতের দাবি, এই তিনটিই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত। উল্টোদিকে নেপালও তাদের অংশ বলে দাবি করে আসছে। কিন্তু সেই বিবাদ চরমে ওঠে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের গাটিয়াবর্গ থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পর। নেপাল দাবি করে, এই রাস্তার অংশ নেপালের ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ভারত অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনের অস্বস্তি বাড়িয়ে হংকং প্রসঙ্গ নিরাপত্তা পরিষদে তুলল আমেরিকা, ব্রিটেন

ওই রাস্তা খুলে যাওয়ার কয়েক দিন পরেই নেপালের ভূমি মন্ত্রক ব্যবস্থাপনা দেশের সংশোধিত নতুন ম্যাপ প্রকাশ করে। ম্যাপ প্রকাশের পরেই তীব্র বিরোধিতা করে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, ‘‘এই একপাক্ষিক কার্যক্রম ঐতিহাসিক ঘটনা ও প্রমাণসাপেক্ষ নয়। কৃত্রিম ভাবে দেশের সীমান্ত এ ভাবে বাড়িয়ে দেওয়াকে ভারত কোনও ভাবেই মেনে নেবে না। ম্যাপ আপডেট বিল নেপালের সংসদে পেশের জল্পনার মধ্যেও বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘‘বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’

আরও পড়ুন: সব কিছু খুলছে, এখন আরও বেশি সাবধান থাকতে হবে, বললেন মোদী

কিন্তু এ ভাবে বার বার ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে উড়িয়ে দিয়ে কেন নেপাল ফের বিল পাশে সক্রিয় হল? কেন বিতর্কিত এলাকাগুলি ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করতে মরিয়া নেপালের ওলি সরকার? কূটনৈতিকদের ব্যাখ্যা, এর পিছনে রয়েছে চিনের সমর্থন। ভারতের তরফেও সেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আবার ভারত-নেপাল বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তা স্থগিত রয়েছে। কোভিডের প্রকোপ কমলে সেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক যখন হবে, তখন এ নিয়ে দু’দেশের সঙ্ঘাত চরমে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন