অস্কার গ্র্যোনিং
কয়েক মাস আগেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘চোখ বন্ধ করলেই গ্যাস চেম্বার থেকে সেই আর্তনাদ এখনও শুনতে পাই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ওই চিৎকার আমাকে তাড়া করে বেড়াবে।’’ ৯৬ বছর বয়সে মারা গেলেন সেই প্রাক্তন নাৎসি অফিসার অস্কার গ্র্যোনিং।
১৯৪২ সালে পোলান্ডের আউশভিৎস কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগ দেন গ্র্যোনিং। তখন তাঁর বয়স ২১ বছর। ১৯৪৪-এর গ্রীষ্মে হাঙ্গেরি থেকে আউশভিৎসে নিয়ে আসা হয় প্রায় তিন লক্ষ ইহুদিকে। তাঁদের হত্যায় পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন গ্র্যোনিং।
সেই অপরাধে ২০১৫ সালে চার বছর জেল হয়েছিল অস্কারের। কিন্তু বয়স ও অসুস্থতার দোহাই দিয়ে তিনি বারবার আদালতে আপিল করেছেন এবং কারাদণ্ড এড়িয়েছেন। মাসখানেক আগেই তাঁর আপিল খারিজ করে দেয় ল্যুনেবুর্গের আদালত। কিন্তু অসুস্থতার জন্য হাসপাতালেই ছিলেন, এক দিনের জন্যও জেলে ঢুকতে হয়নি ‘আউশভিৎসের খাজাঞ্চি’কে।
কেন এই নাম? আউশভিৎসে নিয়ে আসার পরে বন্দিদের কাছ থেকে সব টাকাপয়সা ও মূল্যবান বস্তু কেড়ে নেওয়া হত। গ্র্যোনিংয়ের কাজ ছিল, সেই টাকার হিসেব করে ও জিনিসপত্রের তালিকা বানিয়ে বার্লিনে নাৎসিদের সদর দফতরে পাঠানো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের তহবিলের একটা বড় অংশ ছিল এই অর্থ। তাই ‘আউশভিৎসের খাজাঞ্চি’ বলেই তাঁকে ডাকতেন অনেকে।
গত শুক্রবার হাসপাতালেই মারা যান গ্র্যোনিং। তবে হাসপাতাল থেকে এখনও জেল কর্তৃপক্ষকে মৃত্যুর শংসাপত্র পাঠানো হয়নি।