মিশরে ২০ বছরের কারাদণ্ড মুরসিকে

মৃত্যুদণ্ড নয়, দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিকে ২০ বছরের কারাদণ্ডেরই নির্দেশ দিল মিশরের একটি আদালত। অভিযোগ, তাঁর নির্দেশেই ২০১২ সালে বিদ্রোহ দমনের নামে দেশের প্রতিবাদী জনগণের উপর নির্যাতন চালায় প্রশাসন। এ নিয়ে আরও কয়েকটি আদালতে মামলা চলছে মুসরি-সহ সেই সময়কার বেশ কিছু রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কায়রো শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৮
Share:

মৃত্যুদণ্ড নয়, দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিকে ২০ বছরের কারাদণ্ডেরই নির্দেশ দিল মিশরের একটি আদালত। অভিযোগ, তাঁর নির্দেশেই ২০১২ সালে বিদ্রোহ দমনের নামে দেশের প্রতিবাদী জনগণের উপর নির্যাতন চালায় প্রশাসন। এ নিয়ে আরও কয়েকটি আদালতে মামলা চলছে মুসরি-সহ সেই সময়কার বেশ কিছু রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে। তার মধ্যে আজই প্রথম রায় মিলল দেশের একটি বিশেষ অপরাধ-দমন আদালতের তরফে। ওই মামলাতেই আরও ১২ জনের একই সাজা হয়েছে বলে আদালত সূত্রের খবর।

Advertisement

তবে এ দিনের রায়ে খুনের অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে মুরসিকে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বিচারক আহমেদ ইউসুফ জানান, ‘‘খুনের অভিযোগ না টিকলেও বেআইনি অস্ত্র রাখার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকছেই মুসলিম ব্রাদারহুডের এই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে।’’ কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই আজ হেলিকপ্টারে করে আদালত চত্বরে আনা হয় মুরসি ও অন্য অভিযুক্তদের। এ দিনও ভাবলেশহীন দেখায় মুরসিকে। আদালতের রায়ে বিক্ষোভ প্রকাশও করেন অভিযুক্তদের একাংশ।

২০১২-র মার্চ-এপ্রিল নাগাদ দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুসরির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদে নামেন দেশের একাংশ। অভিযোগ, ক্ষমতা হাতে পেয়েই সংবিধানের বেশ কিছু পরিবর্তন করে নিজের ক্ষমতা বাড়াতে থাকেন মুরসি। বিক্ষোভ সামাল দিতে মুসলিম ব্রাদারহুডকেই এগিয়ে দেন মুসরি। সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয় কায়রো-সহ দেশের একটা বড় অংশে। সব চেয়ে খারাপ ঘটনাটি ঘটে সেই বছরেরই ডিসেম্বরে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ বাধে মুসরি-সমর্থকদের। নিহত হন এক সাংবাদিক-সহ ১০ জন। খুনের দায় নিয়ে মুসরির পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয় গোটা দেশ। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের গোপন তথ্য পাচারের পাশাপাশি লেবাননের হিজবুল্লা, প্যালেস্তাইনের হামাস ও ইরানের ইসলামিক গার্ডের হয়ে দেশের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগও রয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট নিজে অবশ্য বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে এসেছেন।

Advertisement

তবু শেষরক্ষা হয়নি। ২০১৩ সালে তাঁকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে মিশরের সেনাবাহিনী। আব্দেল ফতাহ অল-সিসি তখন সেনাপ্রধান। এবং পরে তিনিই মিশরের নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অভিযোগ, তার পর থেকেই মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ শুরু করে মিশর সরকার। সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড় ও বিচার। গত মার্চে মহম্মদ বেদি-সহ ১৩ জন ব্রাদারহুড নেতাকে মতুদণ্ড দেয় আদালত। ২০১৩-র জুলাইয়ে একটি থানায় হামলার অভিযোগে গত কালই সংগঠনের আরও ২২ জন কর্মী-সমর্থককে একই সাজা দিয়েছে অন্য একটি আদালত। সব মিলিয়ে গত দু’বছরে কয়েক হাজার ব্রাদারহুড কর্মীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। আজ মুসরির সাজা ঘোষণায় তাই সংগঠনের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও আজকের এই রায় নিয়ে তারা উচ্চ আদালতে আবেদন জানাতে পারে, বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন