হামলায় আহত ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালের পথে বাবা। শনিবার। ছবি: এএফপি।
মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ফের বাসে হামলা পাকিস্তানে। কোয়েটা ও পিসিন থেকে করাচিগামী দু’টি বাসে জঙ্গিদের হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২২ জন যাত্রীর। চলতি মাসের গোড়াতেই করাচিতে যাত্রী বোঝাই এক বাসে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৪৫ জনকে মারে আইএস জঙ্গিরা।
পুলিশ জানিয়েছে, কাল রাতে পাকিস্তানের বালুচিস্তানের মাস্তুঙ্গ জেলায় পর পর দু’টি বাসে হামলা চালায় জনা পঁচিশেক জঙ্গির একটি দল। তাদের পরনে ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের পোশাক। হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। প্রথমে তাদের সেনার লোক ভেবে ভুল করেছিলেন বাসযাত্রীরা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, কাল রাতে কোয়েটা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে মাস্তুঙ্গ শহরের কাছে বাসগুলিকে আটকায় জঙ্গিরা। বাসের সব যাত্রীকে নেমে আসতে বলে তারা। যাত্রীরা প্রথমে ভেবেছিলেন নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও কারণেই তাঁদের নামতে বলা হচ্ছে। পরে যখন ৩০ জন যাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। তখন বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
অপহরণের খবর পেয়েই তল্লাশি শুরু করে পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী। ৮ জনকে ছেড়ে দিয়ে ২২ জনকে মেরে ফেলে জঙ্গিরা। তার পর কোয়েটা-করাচি জাতীয় সড়কের কাছে পাহাড়ের পাদদেশে দেহগুলি রেখে পালায়। পুলিশের সন্দেহ, রাতেই বালুচিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় গা ঢাকা দেয় জঙ্গিরা। বালুচিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সরফরাজ বুগতি আজ জানান, জঙ্গি দমন অভিযানে অন্তত ৭ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।
আজ রাত পর্যন্ত কোনও জঙ্গি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার না করলেও বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এর পিছনে রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। কয়েক জন যাত্রীও পুলিশকে জানিয়েছেন, জঙ্গিরা তাঁদের জিজ্ঞেস করছিল, কারা কোন প্রদেশের লোক। পরিচয়পত্র দেখে, বেছে বেছে পাখতুনদের মেরেছে জঙ্গিরা। বালুচিস্তানের ওই এলাকা এমনিতেই উপদ্রুত। বালুচ বিচ্ছিন্নতবাদীরা গত মাসেও ২০ জনকে গুলি করে মারে। সে বারও বালুচের বাসিন্দাদের ছেড়ে অন্যদের নিশানা করেছিল জঙ্গিরা।
আজ বালুচিস্তানের কোয়েটায় গভর্নরের বাড়ির সামনে হামলায় হত ১৬ জনের কফিনবন্দি দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁদের পরিজনরা। দেহ সৎকার করতেও অস্বীকার করেছেন তাঁরা। পাখতুন প্রদেশের ওই বাসিন্দাদের দাবি, হামলায় জড়িত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক সরকার।