দুই পড়শির বাণ, তবে সুর চড়াই রাখছে দিল্লি

দুই পড়শি দেশের সাঁড়াশি আক্রমণে বিদ্ধ ভারত। এক দিকে আইসিবিএমের (ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল) সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ নিয়ে নয়াদিল্লিকে এক হাত নিয়েছে চিনের সংবাদমাধ্যম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪০
Share:

দুই পড়শি দেশের সাঁড়াশি আক্রমণে বিদ্ধ ভারত। এক দিকে আইসিবিএমের (ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল) সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ নিয়ে নয়াদিল্লিকে এক হাত নিয়েছে চিনের সংবাদমাধ্যম। সরাসরি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে নিহত কাশ্মীরি জঙ্গি বুরহান ওয়ানিকে ফের বীরের সম্মান দিয়ে কাশ্মীর বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

Advertisement

গত সোমবারই অগ্নি-৪-এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। বেজিং বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি অবশ্য। কিন্তু সরকার পরিচালিত একটি কাগজের সম্পাদকীয়তে সরাসরি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের এই ধরনের (আইসিবিএম) পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে যদি নিরাপত্তা পরিষদের আপত্তি না থাকে, তা হলে পাকিস্তানেরও নিজেদের পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার বাড়ানো উচিত।’’

এর আগে অগ্নি-৫-এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের সময়ও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল চিন। এ বারও যে তার ব্যতিক্রম হবে না, তা ভাল ভাবেই জানত সাউথ ব্লক। পরোক্ষে চিন এটাও বুঝিয়েছে, পাক অস্ত্র ভাণ্ডার মজবুত করতে ইসলামাবাদকে সাহায্য করতে চায় তারা।

Advertisement

আজ ভারত-বিরোধী মন্তব্য করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও। ইসলামাবাদে কাশ্মীর নিয়ে দু’দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তারই উদ্বোধনী ভাষণে শরিফ বলেছেন, ‘‘৭০ বছর ধরে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। কাশ্মীর তো পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গোটা বিশ্বের এ বার বলা উচিত, যথেষ্ট হয়েছে।’’

একই ভাষণে হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানিকে উজ্জ্বল সংগ্রামী নেতা বলে অভিহিত করেছেন শরিফ। উপত্যকায় গত কয়েক মাস ধরে চলা অশান্তি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বুরহানের মতো নেতার মৃত্যু কাশ্মীরিদের সংগ্রাম অন্য মাত্রা যোগ করেছে। বছরের পর বছর ধরে ভারতে সাধারণ কাশ্মীরিদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রতিটি মানুষ কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গে আছেন। কাশ্মীরের প্রতিটি মানুষকে আমরা সব সময়ই রাজনৈতিক, কূটনৈতিক আর নৈতিক ভাবে সমর্থন করে যাব।’’ এর আগেও পাক পার্লামেন্টে বুরহানের প্রশংসা করেছিলেন শরিফ। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ভাষণেও নিহত ওই জঙ্গি নেতাকে বীরের সম্মান দিয়েছেন তিনি। ভারত তখন পাক প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছিল। কিন্তু আজ চিন বা পাকিস্তান প্রসঙ্গে মুখ খোলেনি সাউথ ব্লক। যদিও এই জোড়া আক্রমণ উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভারতের।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত কালই বছরের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর দুই পড়শিকে এক হাত নিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জে জইশ নেতা মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষেত্রে বারবার আপত্তি করে আসছে বেজিং। অন্য দিকে সীমান্তে সন্ত্রাসে মদত দিয়ে চলেছে পাকিস্তান। পঠানকোট-উরিতে একের পর এক জঙ্গি হামলার পরও পাকিস্তানের হাতই শক্ত করে ধরেছে বেজিং। চিন-পাকিস্তানের অর্থনৈতিক করিডরও নয়াদিল্লির বিশেষ উদ্বেগের কারণ। কিন্তু সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না হলে ভারত কোনও ভাবেই আলোচনার রাস্তায় হাঁটবে না বলে সাফ জানিয়ে রেখেছেন আকবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement