(বাঁ দিকে) শাহবাজ় শরিফ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারতের মিত্ররাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে তেলচুক্তি করতে চাইছে পাকিস্তান! মঙ্গলবার রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা আরআইএ-কে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ অওরঙ্গজ়েব সম্ভাব্য এই চুক্তির কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অওরঙ্গজ়েব বলেন, “তেল-সব বেশ কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়া শক্তিশালী। যদি এই সমস্ত ক্ষেত্রে রাশিয়া পাকিস্তানের সঙ্গে সমঝোতা করতে রাজি হয়, তা হলে আমরা খুশি হব।” এই প্রসঙ্গেই ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের সঙ্গে তেলচুক্তির কথা বলেন পাক মন্ত্রী।
গত নভেম্বরেই রাশিয়ার শক্তিমন্ত্রী সের্গেই সিভিলেভ জানিয়েছিলেন, রুশ সংস্থার সহায়তায় পাকিস্তানে একটি তেল শোধনাগার তৈরির বিষয়ে কথা হচ্ছে। মঙ্গলবার অওরঙ্গজ়েব জানান, রাশিয়া এবং পাকিস্তান যৌথ ভাবে একটি ইস্পাতকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মস্কোর উপর আর্থিক বিধিনিষেধ আরোপ করে আমেরিকা এবং পশ্চিমি বিশ্ব। সেই পরিস্থিতিতে সস্তায় খনিজ তেল বিক্রি শুরু করে রাশিয়া। ২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ার অশোধিত খনিজ তেল কেনা শুরু করে ইসলামাবাদও।
প্রসঙ্গত, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে তেলের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে ২০২২ সাল থেকে রুশ তেল আমদানির পরিমাণ বাড়ায় ভারতও। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পাকিস্তান এবং রাশিয়ার মধ্যে তেল আমদানি সংক্রান্ত চুক্তি হলে ট্রাম্প ইসলামাবাদের উপরও শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেন কি না, তা-ই এখন দেখার।
ট্রাম্প অবশ্য গত জুলাই মাসে দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানে বিশালাকার তৈলভান্ডার রয়েছে। সেই তৈলভান্ডারের উন্নতির জন্য ওয়াশিংটন এবং ইসলামাবাদ যৌথ ভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাকিস্তান কোনও এক দিন ভারতকেও তেল বিক্রি করতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি। ট্রাম্প যা-ই দাবি করুন, বাস্তবে পাকিস্তানে সুবিশাল তৈলভান্ডার থাকার প্রমাণ মেলেনি। রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের তেলচুক্তি করতে চাওয়া সেই বাস্তবতাকেই প্রমাণ করল বলে মনে করা হচ্ছে।