উচ্ছ্বাস: স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন। মঙ্গলবার করাচিতে। ছবি: এএফপি।
পাকিস্তানে নয়া সরকার আসার পরে দু’দেশের সম্পর্কে উন্নতি হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হবু পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ফোনও করেছেন তিনি। ইমরানও জয়ের পরেই জানিয়েছেন, ভারত সম্পর্কের উন্নতির জন্য এক পা এগোলে তিনি দু’পা এগোবেন। কিন্তু শান্তি ফেরার আশা বিশেষ নেই বলে মনে করছেন ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার প্রাক্তন প্রধান বিক্রম সুদ।
পাক নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই দিল্লিকে সদর্থক বার্তা দিচ্ছেন ইমরান। আজ, পাক স্বাধীনতা দিবসেও ভারতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার সোহেল মেহমুদ বলেছেন, ‘‘ভারত-সহ সব প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্কই পাকিস্তানের ভাবী সরকারের বিদেশনীতির অন্যতম লক্ষ্য। পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের প্রধান ইমরান খানকে ফোন করে সদর্থক পদক্ষেপ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। দু’পক্ষ এমন পদক্ষেপ করলে সম্পর্কের উন্নতির সুযোগ তৈরি হবে।’’
কিন্তু তার বিশেষ আশা দেখছেন না ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র-এর প্রাক্তন প্রধান বিক্রম সুদ। নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে পাক সেনাবাহিনীই দু’দেশের সুসম্পর্ক তৈরি হতে দেবে না।’’ সুদের মতে, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা দেশের নীতি নির্ধারকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে। কিন্তু পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই রয়েছে সে দেশের নীতি নির্ধারণের কেন্দ্রে। এ ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। সুদের মতে, পাক সেনা এক বিরাট কর্পোরেট সংস্থায় পরিণত হয়েছে। সার থেকে পাউরুটি এমনকি নির্মাণ ব্যবসাতেও লগ্নি রয়েছে পাক সেনার। ভিন্ দেশে ঘাতক বাহিনী ও মাদক পাঠানোর কাজও করে তারা। কারখানাতেও ঢুকে পড়েছে। সুদের কথায়, ‘‘রাতারাতি পাকিস্তান শুধরে যাবে, এমন ভাবার
কারণ নেই। ভারতকে যারা আগাগোড়া
নিজেদের শত্রু মনে করে, তাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা সফল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।’’
র’ কি তাহলে যুদ্ধের ঘুঁটি সাজাচ্ছে? সুদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাজ প্রতিপক্ষকে নজরে রাখা। এবং যাতে আমাদের দেশে কোনও বিশৃঙ্খলা না তৈরি হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে সতর্ক করা। যুদ্ধ এড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
কূটনীতিকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনও সে দেশের সেনার হাত শক্ত করছে। পাক নির্বাচনে বিপুল রিগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে ইমরানের বিরোধী দলগুলি। আজ স্বাধীনতা দিবসে খোদ পাক প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেন বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের উচিত এই অভিযোগের তদন্ত করা।’’