এ বার ঘরে ফেরার পালা জালালুদ্দিনের। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
ভারতে এসেছিলেন সন্দেহজনক নথিপত্র নিয়ে। ভারত ছাড়লেন ভাগবত গীতা নিয়ে।
পাকিস্তানের নাগরিক জালালউদ্দিনের কাহিনিটা এক কথায় শেষ করার মতো নয়। দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে যেন একটা ‘লড়াই’ চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। নিজের সঙ্গে ‘লড়াই’। নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার লড়াই।কারাবন্দি থেকে ‘শিক্ষিত’ মানুষ হয়ে ওঠার লড়াই।
আদতে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা। কিন্তু বছর সতেরো আগে বারাণসীতে দেখা গিয়েছিল জালালউদ্দিনকে। সে সময় তাঁর হাতে ছিল বেশ কিছু সন্দেহজনক কাগজপত্র।
আরও পড়ুন
মন্দির খুলছে আজ, কড়া নিরাপত্তায় মোড়া শবরীমালা
বারাণসী সেন্ট্রাল জেলের সিনিয়র সুপারিন্টে়ডেন্ট অম্বরীশ গৌড় জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন জালালউদ্দিন। ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসের সামনে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। সঙ্গে ছিল ক্যান্টনমেন্ট-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ম্যাপ।সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় জালালউদ্দিনকে। অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট-এর আওতায় বেশ কিছু দিন মামলা চলার পর আদালতের রায়ে ১৬ বছরের জেল হয় তাঁর। ঠাঁই হয় বারাণসী সেন্ট্রাল জেলে।
আরও পড়ুন
এক অভিবাসী মায়ের জন্য এ বড় কঠিন সময়
জেলে থাকাকালীনই ‘লড়াই’ শুরু জালালউদ্দিনের। জেলে বসেই ফের এক বার প্রথাগত ভাবে পড়াশোনায় নিজেকে ডুবিয়ে দেন তিনি। অম্বরীশ গৌড় বলেন, “গ্রেফতারির সময় হাইস্কুল পাশ ছিলেন জালালউদ্দিন। এর পর জেল থেকেই ভর্তি হন ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (ইগনু)-এ। জেল থেকেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের পড়া শুরু।” করেসপন্ডেন্স কোর্সের মাধ্যমে সেই সব পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি জালালউদ্দিন। অম্বরীশ গৌড়ের কথায়, “জেলে থাকাকালীন ইলেকট্রিশিয়ানের একটা কোর্সও করেছেন তিনি।” পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলোতেও আগ্রহ জালালউদ্দিনের। অম্বরীশ গৌড় বলেন, “গত তিন বছর ধরেই জেল ক্রিকেট লিগের আম্পায়ারিং করছে জালালউদ্দিন।”
আরও পড়ুন
মন্দির চাই, তবে তারও আগে মোদীকে চাই, বলছে সন্ত সমিতি
চলতি মাসেই জালালউদ্দিনের সাজা শেষ হয়েছে। রবিবার জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এ বার ঘরে ফেরার পালা! তবে পাকিস্তানে যাওয়ার আগে সঙ্গে ভাগবত গীতা নিয়ে ফিরছেন তিনি।
জালালউদ্দিনকে তাঁর দেশ পাকিস্তানে ফেরাতে পুলিশের একটি বিশেষ দল যাবে। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে অমৃতসরে। সেখান থেকে ওয়াঘা সীমান্তে পাক কর্তৃপক্ষের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হবে। তার পর নিজের ঘরে ফিরবেন জালালউদ্দিন!
(সারা বিশ্বের সেরা সব খবর বাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)