আসমা আজিজ
স্বামীর বন্ধুদের সামনে নাচতে রাজি হননি। সেই ‘অপরাধে’ পাকিস্তানের এক মহিলাকে মারধর করে মাথা কামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
ঘটনাটি কয়েক দিন আগের। লাহৌরের বাসিন্দা আসমা আজিজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে জানান, অভিযোগ জানালেও গড়িমসি করছে পুলিশ। ভাইরাল হওয়া পোস্টটি নজরে আসায় তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আফ্রিদি। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। জানিয়েছে, আসমার অভিযোগ পেয়েই পুলিশের একটি দল তাদের বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি তালাবন্ধ ছিল।
লাহৌরের অভিজাত এলাকায় প্রতিরক্ষা কর্মীদের আবাসনে স্বামী মিয়াঁ ফয়জলের সঙ্গে থাকতেন আসমা। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাতে বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে মজলিশ বসিয়েছিলেন ফয়জল। সকলের সামনে আসমাকে নাচতে বলেন তিনি। আগেও বহু বার এমন করেছেন ফয়জল। কিন্তু সে দিন বেঁকে বসেন আসমা। জানিয়ে দেন তিনি নাচবেন না। মহিলার অভিযোগ, এর পরেই ক্ষিপ্ত ফয়জল পরিচারকদের সামনে আসমাকে নগ্ন করে পাইপ দিয়ে পেটান। তার পর মাথা কামিয়ে দেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় আসমার চুল। সে সময় আসমার হাত-পা চেপে ধরেছিলেন ফয়জলের কর্মচারী রশিদ আলি। অভিযোগ, ওই অবস্থায় তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেন আসমা।
ফয়জল অবশ্য দাবি করেন, সে দিন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি নেশা করেছিলেন। মাদকাচ্ছন্ন অবস্থায় আসমা নিজেই নিজের চুল কাটছিলেন। ফয়জল শুধু তাঁকে ওই কাজে সাহায্য করেছেন!
আসমার স্বামী ও কর্মচারী রশিদ আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডাক্তারি পরীক্ষায় আসমার মাথায়, মুখে আঁচড়ের দাগ, ও মারধরের চিহ্ন মিলেছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি টুইটে বলা হয়েছে, নারী নির্যাতন রুখতে ধারাবাহিক পরিবর্তনের প্রয়োজন।