পালমাইরার সৌধে আইএস-পতাকা। এই ছবিই ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে।
সৌধশহরে এখনও অক্ষত রয়েছে ইতিহাস। সিরিয়ার ঐতিহাসিক শহর পালমাইরার কয়েকটি ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করে এমনটাই দাবি করল পশ্চিম এশিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
সম্প্রতি, পালমাইরার তাদমোরের সৌধ এবং মন্দিরের বেশ কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে। মনে করা হচ্ছে, আইএসের প্রচার শাখার তরফেই ছবিগুলি পোস্ট করা হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, হাজার বছরের পুরনো রোমান স্থাপত্যে ওড়ানো হয়েছে আইএস-এর পতাকা। ছবিগুলিতে স্পষ্ট, এখনও জঙ্গিদের হাত পড়েনি ইতিহাসে।
গত সপ্তাহেই সিরিয়ার সেনাকে হটিয়ে পালমাইরা দখল করে জঙ্গিরা। একটি মানবাধিকার সংস্থা জানায়, পালমাইরা দখলের দিন দশেকের মধ্যে প্রায় ৩০০ মানুষকে খুন করেছে জঙ্গিরা। অপহৃত আর ঘরছাড়ার সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। সূত্রের খবর, আজই সরকারের চরবৃত্তির অভিযোগে পালমাইরার একটি প্রাচীন অ্যাম্ফিথিয়েটারে ২০ জনকে গুলি করে মেরেছে জঙ্গিরা।
এই পরিস্থিতিতে বন্দুকের নলের সামনে বিপন্ন ইতিহাসকে বাঁচাতে বিশ্বের কাছে আর্তি জানিয়েছিল সিরিয়া। এর আগে আসিরীয় সভ্যতার বিভিন্ন প্রত্ন নিদর্শন ধুলোয় মিশিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। ধ্বংস করেছে জাদুঘর, গ্রন্থাগার, ঐতিহাসিক স্থাপত্য। রেহাই পায়নি সাদ্দাম হোসেনের কবর। খোদ আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি জানিয়েছিলেন, সিরিয়া-ইরাকের ইসলাম পূর্ববর্তী যাবতীয় ইতিহাস ধ্বংস করার সঙ্গে মিশরের পিরামিডেও আঘাত হানার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। স্বাভাবিক ভাবেই জঙ্গিদের পালমাইরা দলের পরে প্রমাদ গুণেছিলেন ইতিহাসবিদ-প্রত্ন বিশেষজ্ঞেরা। যদিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এই ছবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সেগুলি আদৌ আসল কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। পালমাইরা যে অক্ষত রয়েছে, তা বিশ্বের মানুষকে জানানোর পিছনে জঙ্গিগোষ্ঠীর কী মতলব রয়েছে— প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
জঙ্গিদের প্রকাশ করা দশটি ছবির মধ্যে যেমন ভাঙা অ্যাম্ফিথিয়েটার, দীর্ঘ সৌধের পাশাপাশি রয়েছে জেলের কুঠুরির ছবিও। পালমাইরার জেলের দখল নিয়ে ধর্মীয় পতাকা উড়িয়েছে জেহাদিরা। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, জেলের একটি অন্ধকার কুঠুরিতে লাগানো রয়েছে সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদের একটি ছবি!